নীলফামারীতে ‘দারিদ্র বিমোচন সংস্থা’ (প্রোন) এ গচ্ছিত জামানত ও পি.এফ এর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মো. মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা কর্মস্থলে গেলে অফিসের মূল গেটে তালা ঝুলানো দেখতে পায়।
তালা বন্ধ থাকায় চাকরির নিশচয়তা না পাওয়ায় গচ্ছিত জামানত ও পি.এফ এর টাকা উদ্ধারের দাবিতে অফিস ঘেরাও করেন তারা। সেখানে দীর্ঘ সময় অতিক্রম করার পরে নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে মুঠোফোনে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়। তাই গচ্ছিত জামানত ও পি.এফ এর টাকা উদ্ধারের দাবিতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেন সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
খবর পেয়ে সদর উপজেলার কুখাপাড়া এলাকায় অবস্থিত প্রোন এর প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় মূল গেটের ভেতর থেকে তালা দেয়া। বাহিরে প্রায় ত্রিশ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী অফিসের ভেতরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছেন।
তথ্য মতে, সংস্থাটি স্থাপিত হয় ২০০৪ সালে। রেজিঃ নং-নীলঃ পৌর ২৯৫/২০০৭। এই সংস্থার আওতায় মূলত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। নীলফামারী সদরে তিনটি শাখায় প্রায় ২শ স্কুল রয়েছে এবং টেংগনমারী, জলঢাকা, ডোমার, ডিমলা, চিলাহাটিসহ বিভিন্ন জায়গায় মোট ১ হাজারেরও বেশী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই সংস্থাটির। প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেতনের আওতাভুক্ত। বেতন নেয়া হয় শ্রেণিভেদে ১৮০ থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত।
সেখানে অফিসের হিসাব রক্ষক আরফাতারা আমিন বলেন, আমি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ‘দারিদ্র বিমোচন সংস্থা’ (প্রোন) এ কাজ করছি। চাকরির শুরুতে আমাদের কাছে ১৫ হাজার টাকা জামানত নেয়া হয় এবং প্রতি মাসে বেতন থেকে কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ডেও টাকা জমা দেয়া হয়েছে। আজ তিনি অফিসে তালা ঝুলিয়ে নিরুদ্দেশ। আমরা অফিসের ভিতরে প্রবেশ করতে পারছি না।
সংস্থাটির কর্মসূচি সংগঠক গোলাম রব্বানী, প্রদীপ রায়, ম্যানেজার মো. রেজোয়ানুল হক রেজাসহ অনেকে বলেন, আমরা এই সংস্থায় বিভিন্ন পদে কর্মরত আছি। এখানে প্রত্যেকেরই ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা হয়েছে কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ডে। সেইসঙ্গে আমাদের মূল্যবান সময়ও দিচ্ছি এই সংস্থার সঙ্গে। একটা সময় আমাদের মনে হয়েছিলো আমরা স্থায়ীভাবে এখানে চাকরি করতে পারবো।
কিন্তু হটাৎ করে আজ অফিসে তালা দেখে আমরা অবাক। আমাদের তো পরিবার আছে। আবার এতোগুলো টাকা জমা আছে তাদের কাছে। আমরা এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছি না? তাই আমাদের দাবি যেন দ্রুত আমাদের সব পাওনা টাকা পরিশোধ করা হয়। না হলে আমাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে।
সংস্থার পরিচালক মমিনুর রহমানের সহধর্মিনী নাছরিন বেগম বলেন, আমি জানুয়ারি মাস থেকে ভাড়ার একটি টাকাও পাইনি তাই গেটে তালা দিয়েছি। তার স্বামী বাড়িতে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্বামী মমিনুর রহমান বাসায় নেই। তার ফোনও বন্ধ।
প্রোনের পরিচালক মো. মমিনুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আসেনি।
টিএইচ