শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

নোয়াখালীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে 

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে 

নোয়াখালীতে বন্যাদুর্গত এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও বাড়িঘরে থাকা মানুষদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে এসব রোগ। 

জেলায় এ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২১৫ জন। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক, নার্স ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। 

২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ড শিশু ওয়ার্ড়সহ শয্যা সংখ্যা ২০টি। চিকিৎসা নিচ্ছে এর কয়েকগুণ বেশি রোগী। বেডে জায়গা না হওয়ায় মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জরুরি ভিত্তিতে একটি ডায়রিয়া ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। এতেও রোগীর চাপ কমছে না।

জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার জেলা সদরে ২৬০ জন ডায়রিয়া রোগীর এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আরও ২৪৫ জন ভর্তি রয়েছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। একই পরিবারের একাধিক সদস্য আক্রান্ত হওয়ায় কেউ কারো খবর নিতে পারছে না। বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন কবির ও সাথী বেগম বলেন, সিস্টার ডাকলেও ব্যস্ততার ওজুহাতে আসতে চায় না, আবারও একটি স্যালাইন ১টা ছাড়া আর কোন ওষুধ দেন, স্লিপ দিয়ে আমরা বাহির থেকে নিয়ে আসি। 

২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. নাহিদ হাসান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যার কারণে হাসপাতালটিতে ২৪০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে, যাদের সবার শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাওয়ায় নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। 

‘ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জায়গা দিতে না পারায় নতুন ওয়ার্ডেও রোগী রাখা হলেও চিকিৎক, নার্স এবং ওষুধ সংকট সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। 

নোয়াখালী ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ  মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ২২ আগস্ট থেকে শুধু সদর হসপিটালের ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৯৭২জন এবং সাপের কামড়ে ভর্তি হয়েছে ২৫৭ জন। গত ২৪+৩ সেপ্টেম্বরে সকাল ১১ঘটিকা) ঘণ্টায় ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে হয়েছে ২৫০ জন। আমরা চিকিৎসাসেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছি। তবুও আমরা সাধ্যমত ওষুধ ও চিকিৎসা দিচ্ছি। 

জেলা সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী জানান, বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় জেলায় সরকারি বেসরকারিভাবে ১৪০টি সরকারি মেডিকেল টিম একযোগে কাজ করছে। এসব মেডিকেল টিম ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দেয়ার পাশাপাশি পানিবাহিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। 

বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গত এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নিরাপদ পানি ব্যবহার ও খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা।

টিএইচ