গত ২০ জুলাই রাতে অজ্ঞাতনামা আসামিরা কৌশলে বৃদ্ধ দম্পতি আশরারফ আলী হাওলাদার ও হোসনে আরা বেগমকে বসত ঘরে প্রবেশ করে মালামাল চুরি করাসহ অজ্ঞাত কারণে তাদের দুজনকেই হত্যা করে যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ওই ঘটনায় গত ২৪ জুলাই বৃদ্ধ দম্পত্তির অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজিসহ পটুয়াখালী জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, আলামত সংগ্রহপূর্বক ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের তৎপর হয়।
পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেলের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পটুয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা টিমের ওসি মো. মিজানুর রহমানের সমন্বয়ে একটি চৌকস অভিযানিক দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গত শুক্রবার মোহাম্মদ আলি হেসেন, পিতা-আব্দুল বারেক গাজী, মাতা-জোবেদা বেগম, সাং-টাউন বহালগাছিয়া গাজীবাড়ি, থানা ও জেলা পটুয়াখালী গ্রেপ্তার করেন।
পরবর্তীতে বর্ণিত ঘটনা সংক্রান্ত ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ঘটনার দিন তার নেতৃত্বে তার সঙ্গীয় অপর চোরসহ তার ভাড়ায়চালিত ইজিবাইক গাড়ি নিয়ে এসে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত রেঞ্জ নিজে বহন করে অপর আসামিসহ মৃত ব্যক্তিদের বসত ঘরে প্রবেশ করে। তারপর ঘরের মধ্যে রক্ষিত মালামাল খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বৃদ্ধা টের পাইলে প্রথমে তারা শক্ত কাঠ দিয়ে বৃদ্ধাকে একাধিকবার আঘাতসহ মাথায় আঘাত করলে মহিলা মারা যায়।
মালামাল খোঁজাখুজির একপর্যায়ে মৃত মহিলার স্বামী মৃত আশরারফ আলী হাওলাদার গেটের তালা খুলে গেট দিয়ে বাড়িতে প্রবেশের সময় শব্দ পেয়ে তারা ঘরের বাহিরে বাথরুমের কাছে গোপনে আশ্রয় নেয়। বৃদ্ধ লোকটি ঘরে প্রবেশ করে তার মৃতা স্ত্রীকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আসামি-মোহাম্মদ আলি হেসেন অপর সঙ্গীসহ পুনরায় ঘরে প্রবেশ করে এবং তার হাতে থাকা রেঞ্জ দিয়ে প্রথমে বৃদ্ধ লোকটির মাথার পিছনে আঘাতসহ একাধিক আঘাত করলে বৃদ্ধ লোকটি মারা যায়।
গ্রেপ্তার আসামিকে গত শনিবার আদালতে প্রেরণ করলে আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এ হত্যাকাণ্ডে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা কিংবা কোন ইন্ধনদাতা রয়েছে কিনা? এ বিষয়ে ব্যাপক তদন্ত অব্যাহত আছে এবং ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
টিএইচ