নওগাঁর পত্নীতলায় গরুর এলএসডি (লাম্পি স্কিন ডিজিজ) ভাইরাস রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই বেড়েই চলছে এর সংখ্যা। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে প্রান্তিক গরু পালনকারী ও খামারিরা। এ রোগে বড় গরুর চেয়ে ছোট গরু কিংবা বাছুরের আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের বুলবুল হোসেন বুলুর একটি ও মনজুরুল হোসেনের একটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি মারা যায়।
একই গ্রামের সালাউদ্দিন আহম্মেদ জানান, ‘আমার তিনটি গরুর মধ্যে বর্তমানে লাম্পি স্কিন রোগে একটি গরু আক্রান্ত হয়েছে। অসুস্থ গরু ঘাস-পানি কিছুই খাচ্ছে না। এসময় কাঁপতে শুরু করে। দেহে তৈরি হয় গুটি গুটি হয়ে ফোলা। সৃষ্টি হয় ক্ষতের। ঝিমিয়ে পড়ে খাওয়া ছেড়ে দিয়ে মারা যাচ্ছে।
এছাড়াও ফতেপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম, সেলিম হোসেন, গোলাম হোসেন, মনসুর আলীরও একটি করে গরু আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নে দিঘিপাড়ার বাসিন্দা আজিজার রহমান জানান, ‘তাঁর খামারে ছোট-বড় মিলে মোট ৯ টি গরু রয়েছে। এতে তিনটি ছোট গরু আক্রান্ত হয়েছে।’
জানা যায়, এ রোগে মৃত্যুহার কম হলেও ঝুঁকি বাড়ছে দুগ্ধ, চামড়া ও মাংশ শিল্পে। এ রোগ আক্রান্ত হলে পশুর চামড়া অনেকটাই অকার্যকর হয়ে যায়। আবার দুগ্ধ গাভী আক্রান্ত হলে দুধ উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গরু পালনকারী ও খামারিরা। এমতাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত পশু পালনকারীদের সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে তালিকা করে সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়লেও এতে আতঙ্ক না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। তবে আক্রান্ত গবাদিপশুকে আলাদা করে মশারি ভিতর রাখতে হবে। এছাড়া নিমপাতা ও খাবার সোডা বেশি বেশি খাওয়াতে হবে। গরুর শরীর ও পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
পত্নীতলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, লাম্পি স্কিন রোগের এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছেন।
টিএইচ