সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়লেও ঝুলে আছে উন্নীতকরণ কাজ 

ফেনী প্রতিনিধি

পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়লেও ঝুলে আছে উন্নীতকরণ কাজ 

৬ বছরে আগে কাজের টেন্ডার হয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৫ বার বাড়লেও  বাস্তবায়নকারী সংস্থার গাফিলতির কারণে এখনও শেষ হয়নি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনের নির্মাণ ও ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ। 

এতে স্থানীয় গ্রামীণ অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা নিতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। শয্যা বৃদ্ধির কাজ শেষ হলে রোগীর সেবার মান আরো বৃদ্ধি এবং ল্যাব সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে বলে জানান হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে আউটডোরে দৈনিক ৩৫০-৪০০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। তার মধ্যে প্রতিদিন ৩১ শয্যার বিপরীতে গড়ে ৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। 

কাজটি পায় এমএস ডালি কন্সট্রাকশন লিমিটেড। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সের ৫০ শয্যা উন্নীতকরণের কাজ শেষ হয়নি।

প্রকল্পের মেয়াদ দেয়া হয় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ শুরু হয়ে ১৮ মাস পর্যন্ত, অথচ বাস্তবে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৮০ শতাংশ। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় আশানুরূপ চিকিৎসাসেবা নিতে ও দিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। চলতি বছরের মার্চ মাসে চতুর্থ মেয়াদের সময় শেষ হয়। পরবর্তীতে পুনরায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

সূত্র জানায়, হাসপাতালটি বর্তমানে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হওয়ায় এবং জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আশা পর্যাপ্ত পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হতো। ফলে ফুলগাজী উপজেলার জনগণের চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধির জন্য হাসপাতালটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। 

২০১৮ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ১৯ শয্যা বৃদ্ধিকরণের কাজ শুরু হওয়ার ৬ বছর পরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়নি। 

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর ৪ বার সময় বৃদ্ধির পরও এখনো কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ বৃদ্ধিকৃত সময়সীমা ছিল চলতি বছরের ১৫ মার্চ। সেই সময় শেষ হওয়ার পর এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি। তবে অভিযোগ উঠেছে, নতুন ভবনটির কাজ প্রথমে দ্রুত গতিতে চললেও পরে ৬ তলা হাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজ ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রিপন নামে এক রোগী জানান, করোনার আগে থেকে শুরু হয়ে হাসপাতালের নতুন ভবনের কাজ এখনো চলছে দেখছি। যখনই হাসপাতালে আসি তখনই ধুলা-বালিতে ভরপুর থাকে হাসপাতাল আঙ্গিনা। ভর্তি রোগীদের বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মধ্যে মধ্যে কাজ চলতে দেখা যায় আবার প্রায় সময় কাজ বন্ধ থাকে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, নতুন ভবনের নির্মাণকাজ বিভিন্ন সমস্যার কারণে দেরি হয়। প্রথমদিকে কোভিড-১৯ তারপর পাইল ড্রাইভের জন্য হাইড্রলিক রিক মেশিন, ঢালাইয়ের জন্য পাথর সময়মতো না পাওয়ায় ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মূলত কাজের দেরি হচ্ছে।

ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও আসহাব মেহেরাজ বলেন, টেন্ডার অনুসারে ২০১৯ সালে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবায়কারী সংস্থা এখনো আমাদের হাসপাতাল নতুন ভবন বুঝিয়ে দেয়নি। ফলে আগত সেবাপ্রার্থী রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে অন্য সংস্কার কাজও করা যাচ্ছে না।

টিএইচ