কিশোরগঞ্জে পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামটি লিচুর গ্রাম হিসেবে বিখ্যাত। লিচু চাষ করে এখানকার চাষিদের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। চাষিদের মতে, প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২ হাজার লিচু উৎপন্ন হয়ে থাকে এবং একেক মৌসুমে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রায় তিন-চার কোটি টাকার মত লিচু বিক্রি হয়ে থাকে।
স্থানীয় অধিবাসী জানান, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে দুশ বছর ধরে লিচু চাষ হয়ে আসছে। টক্ টকে লাল রং, বড় আকৃতি ও ছোট বীচি সেই সঙ্গে মিষ্টি স্বাদ-এই হচ্ছে মঙ্গলবাড়িয়া লিচুর বৈশিষ্ট্য। এ সমস্ত গুণের কারণেই এখানকার লিচু ইতোমধ্যে দেশে সুনাম কুড়িয়েছে। বাড়ি-ঘরের আঙিনা এবং রাস্তার দু’পাশে অবস্থিত গাছগুলো ছেয়ে গেছে লাল বর্ণের লিচুতে। চারিদিকে রাঙা লালের সমারোহ মুগ্ধ করছে যে কোন মানুষকে।
সারা দেশের এখানকার লিচুর চাহিদার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু ক্রয়ের জন্য আগত ব্যবসায়ী শরীফ মিয়া বলেন, আমি একজন লিচু ব্যবসায়ী। এখান থেকে লিচু কিনে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিক্রি করি। এখানকার লিচুর সারা দেশেই খুব চাহিদা।
লিচু বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষি মোখলেছুর রহমান বলেন, আমার বাগানে ৩০/৩৫টি লিচু গাছ আছে। এই লিচু বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছি। আমাকে দেখে অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে লিচু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
পাকুন্দিয়ার পৌরমেয়র মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচু চাষের ব্যাপারে কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে। যদি কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগ সঠিকভাবে চাষিদের পরামর্শ ও তদারকি করতেন এবং লিচু চাষিদের ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে এ লিচুর ফলন আরো সমৃদ্ধি পেত। মজার ব্যাপারে হচ্ছে মঙ্গলবাড়ীয়া ছাড়াও পাকুন্দিয়া প্রায় সবকটি ইউনিয়নে রয়েছে হাজার হাজার লিচু গাছ।
পাকুন্দিয়া পৌর সদর ও হোসেন্দী ইউনিয়নেই সবচেয়ে বেশি। উপজেলা যেখানেই লিচু হউক না কেন এর নাম অবশ্যই মঙ্গলবাড়ীয়া লিচু। প্রয়োজনীয় সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা প্রদান করা হলে একদিকে যেমন এখানকার উৎপাদিত লিচুর আবাদ আরও সমপ্রসারণ করা সম্ভব সেই সঙ্গে বিপণনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে পাল্টে যেতে পারে বলে স্থানীয় সুশীল সমাজের অভিমত।
টিএইচ