কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আবাদি-অনাবাদি উঁচু জমিতে, বাড়ির পাশে, বিভিন্ন গাছে কিংবা উঠোনে পান চাষে কৃষক-কৃষাণীদের আগ্রহ দিন দিনই বেড়েই চলেছে।
এতে একদিকে যেমন চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি, অন্যদিকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার অনেক প্রান্তিক কৃষক ও হতদরিদ্র পরিবার। বর্তমানে বাজারে পানের দাম ও চাহিদা কিছুটা বেশি থাকায় অন্য ফসলের তুলনায় পান চাষের প্রতি ঝুঁকছেন বলে জানান স্থানীয় পানচাষীরা।
সূত্রমতে, উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট বড় প্রায় দুই শতাধিক পানের বরজ রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত পান উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে পার্শ্ববর্তী পাকুন্দিয়া, নান্দাইল, গফরগাঁও, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এরই মধ্যে উপজেলা পানপল্লী খ্যাত সুরাটি, সিদলা, জাহাঙ্গীরপুর, পিতলগঞ্জ, ভরুয়া, হারেঞ্জাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের অনেকেই শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে পান চাষ করে বদলে দিচ্ছেন তাদের পরিবারের ভাগ্য।
স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি বছর উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। প্রতি একর জমিতে পানের উৎপাদন ব্যয় হয়ে থাকে গড়ে ৫-৬ লাখ টাকা। আর তা বিক্রি হয় ৮-১০ লাখ টাকায়। হোসেনপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় তিন শতাধিক পান চাষি রয়েছেন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের পানচাষী বাবুল মিয়া, হারেঞ্জা গ্রামের হুমায়ুন, ভরুয়া গ্রামের পানচাষী নজরুলসহ অনেকেই জানান, পানচাষ তুলনামূলক লাভজনক। চাষাবাদের এক-দেড় মাসের মাথায় বরজের পান বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠে। বর্ষা মৌসুমে পানের উৎপাদন একটু বেশি হয়।
এজন্য খুব একটা কাজের লোক রাখতে হয় না। নিজেদের অবসর সময়টা তারা ব্যয় করেন নিজেদের বরজের পিছনে। এতে বরজ থেকে প্রতি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করতে সক্ষম হন তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম শাহজাহান কবীর জানান, পান তুলনামূলকভাবে লাভজনক হওয়ায় হোসেনপুরের বিভিন্ন এলাকায় পানচাষে কৃষকদের আগ্রহ দিনদিনই বাড়ছে। তাই কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরাও কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছেন। ফলে এবারের উৎপাদিত পান থেকে চাষিরা কাঙ্খিত লাভবান হবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
টিএইচ