খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ৫৪ জন আহত হয়েছে। পুরো শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসহ ব্যাপকহারে যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটি শহরজুড়েই জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
শুক্রবার সকালে কোনো প্রকার আগাম ঘোষণা ছাড়াই কয়েক হাজার পাহাড়ি যুবক বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শহরের জিমনেসিয়াম হয়ে প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা বনরূপা বাজারে এসে মসজিদ, পেট্রোল পাম্পসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে থাকে। এতে করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরজুড়ে।
মসজিদ-মার্কেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় বাঙালিরা সংগঠিত হয়ে ধাওয়া দিলে পাহাড়িরা পিছু হটে। রাস্তায় চলাচলকারী বাস, ট্রাক ট্যাক্সিতেও হামলা করা হয়। শহরের হ্যাপির মোড়কে কেন্দ্র করে এর দু’দিকে অবস্থান নেন পাহাড়ি ও বাঙালিরা।
পরবর্তীতে পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয়পক্ষ শহরের বনরূপা, হ্যাপীর মোড়, কালিন্দিপুর, রাজবাড়ি, স্টেডিয়াম এলাকা, কল্যাণপুর, ভেদভেদীসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে অন্তত ৩০টি যানবাহন ভাংচুরের পাশাপাশি উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও তার নাম-ঠিকানা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করেননি।
আহতদের মধ্যে বাঙালিদের বেশ কয়েকজনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে। এছাড়া আহত পাহাড়িরা মারধর ও ধারালোর অস্ত্রের আঘাতের কারণে আহত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০/১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সাদিয়া আক্তার।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আহত অন্তত ৫৪জন হাসপাতালে গিয়েছে। এতে গুরুতর আহত ১৯জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। আর একজন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জনকে চট্টগ্রামে রেফার্ড করা হয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে দুপুর দুইটা থেকে রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. মোশাররফ হোসেন খান।
রাঙামাটি পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামালউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, `সকালে পাহাড়িদের একটি মিছিল বনরূপায় এসে ফিরে যাওয়ার সময় বাঙালিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর করে। এরপরই বাঙালি ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের পাল্টা ধাওয়া দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রাঙামাটিতে সকালে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পুলিশ সেনাবাহিনী বিজিবি কাজ শুরু করেছে।
টিএইচ