সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

পাহাড়ে কলাচাষে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসছে চাষীদের

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

পাহাড়ে কলাচাষে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসছে চাষীদের

পাহাড়ে ১২ মাস কলা চাষ হয় বলে সব মৌসুমে এখানে কলা পাওয়া যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ে কলা চাষে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার পথে হাঁটছেন চাষিরা। রাঙামাটির বিভিন্ন প্রত্যন্ত জনপদ থেকে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে বিপুল পরিমাণ কলা বিক্রি হয় বিভিন্ন হাট-বাজারে।

জানা যায়, দেশজুড়ে পাহাড়ের কলার চাহিদা বেশি হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। সাপ্তাহিক হাটের দিন লাখ টাকার কলা বেচাকেনা হয়। এমন চিত্রই দেখা গেছে রাঙামাটির সবচেয়ে বড় হাট লংগদুর মাইনী বাজারে। পাহাড়ে উৎপাদিত কলা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাইকারদের হাত ধরে ঢাকা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।

আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার ফলে পাহাড়ে দেশীয় কলাচাষের উপযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে। পার্বত্যাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশি কলার চাষ বাড়লেও বাড়েনি পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সঠিক সময়ে বাজারজাত করার অভাবে উপযুক্ত দাম মেলে না। এমনটাই জানিয়েছেন কলাচাষিরা।

পাহাড়ে মাটিভেদে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ হয়। এর মধ্যে দুই জাতের কলা চাষ হতে দেখা যায়। একটি দেশি জাতের বাংলা কলা, অন্যটি চম্পা কলা। এছাড়া সবরি ও সাগর কলা চাষ হয় এখানে। এ অঞ্চলে কলা চাষে কীটনাশক ব্যবহার হয় না বললেই চলে। কলা এমনিতেই পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। সারাবছর এসব কলার ফলন পাওয়া গেলেও আগস্ট-অক্টোবর মাসে বেশি পাওয়া যায়।

কুমিল্লা থেকে মাইনীমূখ বাজারে আসা ব্যবসায়ী মো. সোবহান জানান, সারাবছরই তিনি এ বাজার থেকে কুমিল্লা ও আশেপাশের জেলায় কলা নিয়ে যান। বেশ সুস্বাদু হওয়ায় সমতলের জেলায় এ অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি। ফলে মানুষ পাহাড়ের কলা সামনে পেলেই কিনে নেয়।

কলার বাণিজ্যিক চাষে সরকারি প্রণোদনার দাবি করে স্থানীয় পাইকার জমির উদ্দিন বলেন, ‘কলাচাষে সরকারি সহায়তা দেয়া হলে এখানকার অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবেন চাষিরা।

স্থানীয় বাজারে প্রতি ছড়া কলা মানভেদে ৪০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হয়। যা সমতলের জেলায় দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হয়। এমনটা জানিয়েছেন নোয়াখালী থেকে আসা কলা ব্যবসায়ী মো. জহিরুল হক।

লংগদু উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ের মাটিতে বাংলা ও চাপা কলা ভালো হয়। এখানে কলা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে বলে তেমন পরিচর্যারও প্রয়োজন হয় না। শুধু কলা চারার আশপাশে জঙ্গল পরিষ্কারসহ মরা পাতা ও অতিরিক্ত চারা কেটে ফেললেই হয়। সরকারিভাবে কলা চাষিদের প্রণোদনার সুযোগ থাকলে তাদের দেয়া হবে এবং কৃষি অফিস কর্তৃক চাষাবাদ সম্পর্কিত সকল পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে।

টিএইচ