রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

পীরগঞ্জে বাঁশের সাঁকো আর নৌকাই দুই উপজেলার মানুষের একমাত্র ভরসা

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

পীরগঞ্জে বাঁশের সাঁকো আর নৌকাই দুই উপজেলার মানুষের একমাত্র ভরসা

ঠাকুরগাঁও জেলার  পীরগঞ্জ উপজেলার ৮নং দৌলতপুর ইউনিয়ন এবং ১০নং জাবরহাট ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদীর উপরে আতাই ঘাটে দীর্ঘদিনেও কোন সেতু নির্মাণ না করায় এতে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলা এবং পীরগঞ্জ উপজেলাসহ এখানকার দুই উপজেলার মানুষ।

একটি সেতুর অভাবে দুই উপজেলার প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার  মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। আবার অতিরিক্ত পানি বাড়লে নৌকা দিয়ে পার হতে হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার  মংগল  মর্মু হাওয়া  মর্মুর উদ্যোগে  নির্মিত প্রায় এক হাজার ফুট লম্বা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে কোমলমতি শিক্ষার্থী, কৃষক-কৃষাণী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।

আসা যাওয়ার জন্য এ সাঁকোটিই একমাত্র ভরসা। বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন ও অন্য ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় এ এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজভাবে বাজারজাত করতে পারছেন না।

অপরদিকে দুর্ভোগে কারণে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এ এলাকার মানুষ। বাঁশের সাঁকোর উদ্যোক্তা মংগল মর্মু ও হাওয়া মর্মুসহ এলাকার কয়েকজন স্থানীয় মাতব্বর বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপারের জন্য এ সাঁকোটি তৈরি করেন।

তাছাড়া এ ঘাটের পূর্বপাশে প্রতিবছরই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় সভাসহ তাদের স্নান উৎসবের আয়োজন করা হয়।

দুই উপজেলার হাজার হাজার হিন্দুধর্মাবলম্বী ভক্তরা উৎসব পালন করতে আসেন সেখানে। কিন্তু পীরগঞ্জের এপারে বাঁশের সাঁকোর ব্যবস্থা থাকলেও ওপারে বোচাগঞ্জ উপজেলায় বাঁশের সাঁকোর ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু পানি ভেঙে যাতায়াত করতে হয় ওপারের বোচাগঞ্জ উপজেলায়।

ফলে ওইসব এলাকার লোকজনের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এলাকাবাসীর দাবি একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের। সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি কমবে।

এ ব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পর বরাবরই ভিজিটে আসেন বিভাগ জেলা এবং উপজেলার অনেক অফিসার কিন্তু বারবার ফাইল পড়ে থাকে মন্ত্রণালয়ে। এতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও অবশেষে ঢাকা থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর প্রকল্প পরিচালক মো. এবাদত আলী।

পরিদর্শনে এসে তিনি বলেন, একটি  সেতুর জন্য এতোগুলা লোকজন এখানে জমায়েত হয়েছেন সত্যিই আমি গর্বিত। আমাকে আপনারা যে সম্মান দেখালেন আমি আপনাদের এ ঋণ শোধ করতে পারবো না, তিনি আরও বলেন আমি চেষ্টা করবো আপনাদের এই এলাকার একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়ার।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পীরগঞ্জ উপজেলার ৮নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সনাতন চন্দ্র রায়, ৯নং ইউপি চেয়ারম্যান  সাইদুর রহমান। ১০নং ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বোচাগঞ্জ উপজেলার ৬নং রনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান। 

এই  বিষয়ে ১০নং জাবরহাট ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া বলেন, ভরা বর্ষা মৌসুমে নৌকার ওপর দিয়ে যাতায়াত করে দুই উপজেলার মানুষ। টাঙন নদীর আতাই ঘাটে সরকারি অর্থায়নে একটি সেতু নির্মাণ করা অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতে সুবিধার পাশাপাশি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

এছাড়া এসময় দুই উপজেলার কয়েক হাজার লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা সহ. প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, আতাই ঘাটের এই স্থানে সেতু নির্মাণের বিষয়টি খুবই জরুরি এবং যুগোপযোগী সেতু নির্মাণের প্রয়োজন বলে আমি মনে করি, আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

টিএইচ