সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

পেঁয়াজের দামে হতাশ ফরিদপুরের কৃষকেরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি

পেঁয়াজের দামে হতাশ ফরিদপুরের কৃষকেরা

ফরিদপুর পেঁয়াজ চাষের জন্য বিখ্যাত। আর কিছুদিন পরেই পুরোদমে শুরু হবে পেঁয়াজ তোলা। জেলায় এবারও পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গতবারের লোকসান পুষিয়ে এবার লাভের আশা যেন গুড়ে বালি। মৌসুম শুরুর আগেই পেঁয়াজের দাম অনেক কম। এ অবস্থা বজায় থাকলে এতে লাভ তো দূরে থাক খরচও উঠবে না। কৃষকদের কপালে তাই চিন্তার ভাঁজ। হতাশার পাল্লাও ভারী হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে বেশি পেঁয়াজের আবাদ হয় নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায়। এ দুটি উপজেলাকে পেঁয়াজের রাজধানী বলা হয়। তবে গত বছর থেকে পেঁয়াজ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। গত বছর পেঁয়াজ আবাদ করে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় মোটেই লাভবান হতে পারেননি তারা। 

তাই গতবারের মতো এবারও শুরুতেই পেঁয়াজের দাম কম থাকায় চিন্তায় পড়েছেন সাধারণ কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। গত বছরের লোকসান সামাল দিয়ে এ বছর পেঁয়াজ বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়ানোর যে আশা করেছিলেন তাতে অনেকটাই হতাশ। 

ফরিদপুরের কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার কৃষকদের প্রধান অর্থকরী ফসল পেঁয়াজ। প্রতিটি মৌসুমের উৎপাদিত পেঁয়াজই অত্র অঞ্চলের সাধারণ কৃষকদের সারা বছরের জীবিকার জোগান দিয়ে থাকে। তবে দাম কমের কারণে প্রতিবছরই কমছে পেঁয়াজের আবাদ। 

গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জেলায় মোট ৪০ হাজার ৭৯ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট ৪০ হাজার ৯৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়। আর চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে ৩৫ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। গড়ে প্রতিবছরই কিন্তু পেঁয়াজের আবাদ কমছেই। গতবছরের মতো এবং এবারও শুরুতে যে দাম দেখা যাচ্ছে তাতে আগামীতে পেঁয়াজের আবাদ আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

সালথা উপজেলার পেঁয়াজ চাষি হারাধন মণ্ডল বলেন, গত বছর প্রায় ৬ একর জমিতে হালি পেঁয়াজের চাষে সব মিলিয়ে প্রতি একর জমিতে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও দাম ভালো না পাওয়ায় বেশ লোকসানে পড়তে হয়। এবারও লাভের আশায় প্রায় ৫ একরের বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। 

তাতে গতবারের মতো এবারও লোকসান গুনতে হবে। গত মৌসুমে প্রতিমণ কাঁচা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৭০০ থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা দরে। সারাবছরের জন্য কিছু পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রির আশায় ঘরে মজুদ করে রেখেছিলাম। তা শুকিয়ে অনেক ঘাটতি হয়। বছরের শেষে সেই শুকনো পেঁয়াজ প্রতিমণ বিক্রি করেছি ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ সাড়ে ১৫০০ টাকা দরে। সবশেষে হিসাব করে দেখাযায়, লাভ দূরে থাক উৎপাদন খরচও ওঠেনি।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফরিদপুরে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এবার ৩৫ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজের চাষ হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে ফলনও বাম্পার হবে। তবে দামের বিষয়টিতে আমাদের হাত নেই। আমরা ভালো ফলনে এবং বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ ও সহোযোগিতা করে থাকি।

টিএইচ