কক্সবাজারের পেকুয়ায় ভরাট হয়ে গেছে নিদানতরানী খাল। খালের নাব্য সংকটের কারণে উপজেলার উপকূলবর্তী উজানটিয়া ইউনিয়নের অন্তত দুই হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রবাহমান নিদানতরানী খালের ভরাট অংশ দিয়ে লোনাপানি লোকালয়ে প্রবেশ করা প্রায় থেমে গেছে।
নিদানতরানী খালের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ ভরাট হয়ে গেছে। এক সময়ের প্রচণ্ড খরস্রোতা জোয়ার ভাটার এ খালটি এখন মরা খালে পরিণত।
এদিকে মধ্যম উজানটিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নিয়ন্ত্রণাধীন ৬৪/২বি পোল্ডারের ৫২ নং স্লুইচগেটও অকেজো রয়েছে। স্লুইসগেটের দুটি পানি চলাচলের মুখেও ভরাট হয়ে গেছে। কাঁদায় স্লুইসগেটের দুটি নাশি বিকল রয়েছে।
স্থানীয় লবণ চাষি জাফর আহমদ ও হাবিব উল্লাহ বলেন, বিগত ২৫/৩০ বছর ধরে ৫২নং স্লুইসগেটে সরকারিভাবে কোন প্রকার সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে বর্তমানে এ স্লুইসগেটটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
৫২নং স্লুইসগেট দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে। আমরা চাষিরা লোনা পানির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করেছিলাম। বর্তমানে খুবই নাজুক অবস্থা।
মিয়াজিপাড়ার লবণ ব্যবসায়ী মানিক বলেন, নিদানতরানী খাল ভরাট হয়ে গেছে। এ খালের লোনা পানিতে প্রায় দুই হাজার জমিতে লবণ চাষ হয়। মধ্যম উজানটিয়ার ভেলুয়ারপাড়া, জয়েন উদ্দিন পাড়া, মৌলভীরপাড়া, ফেরাসিঙ্গাপাড়া, মিয়াজিপাড়া, ফকির পাড়া, ষাটদুনিয়াপাড়া, জালিয়াপাড়া, মিয়ারপাড়ার আংশিক, মালেক পাড়ার আংশিক, পেকুয়ার চরের আংশিকসহ বিপুল এলাকায় নিদানতরানী খালের পানির উপর লবণ চাষ নির্ভর করে। এখন ভরাট হয়ে গেছে।
ইউপি সদস্য জমির উদ্দিন বলেন, দ্রুত সময়ে এ খালের পানি চলাচলের পথ খনন করতে হবে। না হলে চলতি মৌসুমে অন্তত দুই হাজার জমির লবণ চাষ বন্ধ থাকবে। এ খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ কিলোমিটার। তবে জরুরিভাবে ২৫ থেকে ৩০ চেইন জায়গা মাটি খননের আওতায় আনতে হবে।
স্থানীয় অর্থনীতি এ খালের পানির উপর নির্ভরশীল। খালটি ভরাট হয়ে গেছে। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবও নেই এলাকায়। সরকারকে আহ্বান করবো লবণ শিল্পের গতি সচল রাখতে যেন এ খালটি দ্রুত খনন করা হয়।
পেকুয়ার সহকারী কমিশন (ভূমি) ও উজানটিয়া ইউপির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক নুর পেয়ারা বেগম জানান, বিষয়টি আমি এ মাত্র সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছি। অবশ্যই সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করবো। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য আমার প্রচেষ্টা থাকবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী অরুপ চক্রবর্তী বলেন, মধ্যম উজানটিয়ার ৫২নং স্লুইসগেটের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
টিএইচ