পল্লী বিদ্যুতের একটি খুটির অপসারণ জটিলতার কারণে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সম্ভাব্য তালিকা থেকে বাদ পড়েছে নড়াইলের কালিয়ার নবনির্মিত চাচুড়ী সেতুর নাম।
বিদ্যুতের খুটির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে সেতুর সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করতে না পারায় সেতুটি সম্ভাব্য এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলে নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। আগামী ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবসে সারা দেশের নবনির্মিত ১৪০ টি সেতু প্রধানমন্ত্রীর একযোগে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
কালিয়া-নড়াইল সড়কের চাঁচুড়ী খালের উপর সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু শেষ হয়নি সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ। কাজটি শেষ করতে বাঁধ সেঁধেছে পল্লীবিদ্যুতের একটি খুটি। সড়কের প্রায় মাঝখানে দাড়িয়ে থাকা খুটির কারণে সেতুর পূর্বপাশের সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। তাই সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও চালু করা যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ উপজেলার কালিয়া-নড়াইল সড়কের চাচুড়ী খালের উপর ৭ কোটি ৮১ লাখ ৮১ হাজার ৭২২ টাকা ব্যয় বরাদ্দ দিয়ে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ হাতে নেয় ২০২০ সালে। সে অনুযায়ী ওই বছর ৩০ ডিসেম্বর খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোজাহের এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
গতবছর ৩০ জুন কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও কাজটি শেষ করতে ঠিকাদারের আড়াই বছরেরও বেশী সময় লেগে যায়। সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের কাজ প্রায় শেষের পথে থাকলেও একটি বিদ্যুতের খুটি অপসারণ জটিলতায় পূর্বপাশের সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে ।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত প্রকৌশলী মো. আশিকুজ্জামান বলেছেন, সেতুর পূর্ব পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজের শুরুতেই সড়কের প্রায় মাঝখানে থাকা পল্লীবিদ্যুতের একটি খুটি অপসারণ করতে যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কালিয়া আঞ্চলিক অফিসে তারা আবেদন করেন এবং বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী ফিস বাবদ ১ মাস আগে পল্লী বিদ্যুতের কালিয়া আঞ্চলিক অফিসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু বার বার ওই অফিসে ধর্না দিয়েও কোন সুরাহা করতে না পারায় সংযোগ সড়কের পূর্বাংশের নির্মাণ কাজ এবং পশ্চিমাংশের কার্পেটিংয়ের কাজ করতে পারছেন না।
কালিয়া পৌরমেয়র মো. ওয়াহিদুজ্জামান হীরা বিষয়টিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সম্ভাব্য তালিকা থেকে সেতুটি বাদ পড়া খুবই দুঃখজনক। দ্রুত খুটিটি অপসারণ করে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি ২ এর কালিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম মো. বনিয়ার রহমান বলেছেন, খুটিটি অপসারণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া খুটিটি তুলতে ক্রেনের প্রয়োজন রয়েছে। ক্রেনের ব্যবস্থা না হওয়ায় সেটি অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ১০/১২ দিনের মধ্যে কাজটি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বার্হী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, সেতুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী নিরাপদ সড়ক দিবস পালন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের সম্ভাব্য তালিকায় এই সেতুর নামটি ছিল।
কিন্তু খুটি অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুতের নির্ধারিত ফিসের টাকা ১ মাস আগে জমা দিলেও সেতুর পূর্বপাশের সংযোগ সড়কের মাঝ বরাবর থাকা বিদ্যুতের খুটি বিদ্যুত বিভাগ অপসারণ না করায় যথাসময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাই সারাদেশে একযোগে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভার্চুয়ালি সেতু উদ্বোধনের সম্ভাব্য তালিকা থেকে চাঁচুড়ী সেতুর নামটি বাদ পড়েছে।
টিএইচ