টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনার পানি শুকিয়ে গেছে উঠেছে অসংখ্য বালুচর। আর এই জেগে উঠা ধু ধু বালুচরে বাদামের চাষ করেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। ইতোমধ্যে বাদাম গাছের সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে পুরো বালুচর। এখানকার চরাঞ্চলের বেলে মাটি বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
তাই চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের বেলে মাটির জমিতে বাদাম চাষ করছেন। গতবছর বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর আরো অধিক পরিমাণ জমিতে বাদাম চাষ করছেন চাষিরা।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গোবিন্দাসী, অজুনা ও গাবসারা ইউনিয়নের চরতারাই, চরভরুয়া, বলরামপুর, কুঠিবয়ড়া, রায়ের বাসালিয়া, রামাই, বাসিদকল, রুলিপাড়া, গোবিন্দপুর, রামপুর, ডিগ্রিচর ও কোনাবাড়ী চরাঞ্চলে বাদাম গাছের সবুজ পাতায় ডেকে গেছে বালুচর।
চাষিরা বলেন, প্রতিবছর বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে আমরা বন্যা পরবর্তী সময়ে জেগে উঠা চরে বাদাম চাষ করি। কারণ অল্পদিনে বাদাম চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি লাভ হয় প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
গাবসারা চরাঞ্চলের বাদাম চাষি গফুর মিয়া বলেন, গত বছর আমি ৮ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো লাভবান হয়েছিলাম। বাদামের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আমি প্রায় ১২ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছরেও বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।
সুস্বাদু, মুখোরচক ও ভিটামিনসমৃদ্ধ এই ফসল একদিকে যেমন খাদ্যে যোগান দিয়ে থাকে অন্যদিকে তেলের চাহিদা পূরণ করে। বাদাম ক্ষেত থেকে কচিপাতা কেটে কৃষকরা তাদের গরু-ছাগলের খাওয়ান। এতে গরু-ছাগল তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্যবান হচ্ছে। তাছাড়া অন্য ফসলের মতো বাদামের জমিতে তেমন একটা সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। শুধু সময়মতো বীজ বুনে বাদাম ঘরে তোলার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। বীজরোপণে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই বাদাম তুলে সংগ্রহ ও হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আরিফুর রহমান জানান, চলতি বছর যমুনা চরাঞ্চলে ১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চরাঞ্চলের বাদাম চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বাদামের বীজ বিতরণ করেছি।
বাদামের ফলন ভালো করার জন্য আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন। আশাকরি আবহাওয়া অনুকূলে থকলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িরে যাবে।
টিএইচ