সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post
ঘুষ নেয়ার অভিযোগ

বারহাট্টায় দ্বিতীয়বারের মত নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত  

বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

বারহাট্টায় দ্বিতীয়বারের মত নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত  

মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দেয়া হচ্ছিল নিয়োগ, এমন অভিযোগে দুই বার স্থগিত করা হয় নিয়োগ পরীক্ষা। নেত্রকোনার বারহাট্টায় উজানগাঁও মনাষ উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর। 

গত ৯ নভেম্বর স্কুলের পাঁচ পদে নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। উপজেলার নয়ন মিয়া ও সন্ধ্যা রানী নামে দুইজন ওই অভিযোগ দেন।

অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৫-৬ মাস আগেও এই স্কুলে ওই পাঁচ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল। সেসময় চাকরি প্রার্থীদের কাছে থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে স্থানীয় এক ব্যক্তি মামলা করার পর নিয়োগ স্থগিত করা হয়। 

অভিযোগের তদন্ত শেষে ১০ অক্টোবর আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। কিন্তু আগের মতো এবারও নিয়োগের জন্য ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে। ফলে নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করে পূনরায় তদন্ত শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উজানগাঁও মনাষ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরীসহ পাঁচ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত ১০ অক্টোবর। গত ১২ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে অগ্রীম ঘুষ নিয়ে অসদুপায়ে নিয়োগের চেষ্টা করছেন। তারা ঘুষ নিয়ে পছন্দের লোকজনকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করানোর পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছেন। 

ঘুষ নিয়ে প্রার্থীদের সাথে দরদামের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তাই নিয়োগ কার্যক্রমে নিরাপদ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও নিরাপদ সংরক্ষণ করাসহ যথাযথ সুষ্ঠু পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাভিত্তিক স্বচ্ছ নিয়োগের আহ্বান জানান দুই ব্যক্তি। এ বিষয়ে দুই ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পর কর্তৃপক্ষ ফের পরীক্ষা স্থগিত করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার বাউসী ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. ছাত্তার বলেন,  যাদের নিয়োগ দেয়া হবে তাদের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে সিলেক্ট করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়টা এলাকার সবাই জানে। ৫-৬ মাস আগেও একবার ওই পদগুলোতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল। তখনও অগ্রীম ঘুষ নেয়ার অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন বলেন, পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেননি। 

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. শামছুল হক বলেন, পরীক্ষা স্থগিত হয়নি আমরা স্থানান্তরিত করেছি। তদন্তের পরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর বলেন, চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া হচ্ছে। দুই ব্যক্তির অভিযোগের পর নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এর আগেও একবার ওই পাঁচ পদে নিয়োগ বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ হলেও ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে সেটি বাতিল করা হয়েছিল। এবারও একইরকম অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কোন কর্মচারী নেই। নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

টিএইচ