নেত্রকোনার বারহাট্টায় কৃষক ও মৎস্যচাষিদের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে সর্বনাশা পাহাড়ি ঢল। উপজেলা ১১ হাজার ৯৮০ হেক্টর রোপা আমন ধানের মধ্যে ৩ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে। ১০ হেক্টর জমির সবজি তলিয়ে গেছে এবং শত শত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
বৃষ্টিপাত এবং ঢলের পানি এখনও না কমায় আরও অনেক জমি এবং পুকুর তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে কংস, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, কলমাকান্দার উব্দাখালি, গোমাই, বারহাট্টার ধনাইখালি ও গোলামখালি নদীর পানি এখনও বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সাহতা, আসমা, চিরাম ও রায়পুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে শত শত বাড়ি-ঘরে ও রোপা আমনের ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে আমন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে কৃষকদের মাথায় হাত। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের মাঠসহ ছোট ছোট রাস্তা তলিয়ে গেছে। ডুবু ডুবু করছে প্লাবিত ইউনিয়নের অনেক বাড়ি-ঘর ও পুকুর । এরই মধ্যে অনেকের পুকুর ডুবে চাষের মাছ ভেসে গেছে বানের পানিতে।
আসমা ইউনিয়নের গোড়ল, গাভারকান্দা, হাওতলা, বাহিরকান্দা, ছয়গাঁও, রৌহা, ২নং সাহতা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেমুড়া, দরুন সাহতা, নল্লা বোয়ালাজানা, গোদাডহর, জয়ডহর, সামানিয়াকান্দা, কদিমচাপারকোনা, চিরাম ইউনিয়নে চিরাম, বাদে চিরাম, খৈকোনা, হরিরামপুর, সাবাদিয়ারবাড়ী, পুটকিয়া, রায়পুর ইউনিয়নের কর্নপুর, রায়পুর, ফকিরের বাজার, ছিচড়াকান্দাসহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ডেমুরা গ্রামের বিপ্লব বিশ্বাস জানান, আমার ১৫০ শতাংশ জমি অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। সাহতা গ্রামের আক্কাছ মিয়া জানান, এ বছরের শুরুতে আমন ফসল রোপণের খুবই ভাল সময় ছিল। কিন্তু গত দুই দিনের বৃষ্টিতে ও ঢলে আমার রোপিত ৯০ শতাংশ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে আমার মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
২নং সাহতা ইউনিয়নের দরুন সাহতা গ্রামের ফিশারি ব্যবসায়ী মোতালেব মিয়া বলেন, আমাদের বাড়িঘরে দেখতে দেখতে পানি ওঠে যাচ্ছে। আমার ২ একর জায়গায় একটি ফিশারি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আমার সব মাছ বিক্রি পানিতে ভেসে গিয়ে আমার সব শেষ হয়ে গেল।
বারহাট্টা ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি জানান, আমি পাহাড়ি ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরকারি সহযোগিতা পৌঁছে দেয়া হবে।
টিএইচ