রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বালিয়াকান্দির তালপট্টি থেকে মেগচামী পর্যন্ত এবং নারুয়ার বিলধামু থেকে মৃগী পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ৩৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি সড়ক উন্নয়নের কাজ। ধুলাবালু আর সামান্য বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ। আজকাল করে মাসের পর মাস কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি-মৃগী সড়কটি গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের (আরসিআইপি) আওতায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১২ দশমিক ৩ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পায় নাটোরের উত্তর বরগাছার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর হাবিবুল আলম। কাজের চুক্তিমূল্য ১৫ কোটি ৫৫ লাখ চার হাজার ১৫০ টাকা। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করা হয়। ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল।
সরেজমিন দেখা যায়, বালিয়াকান্দির তালপট্টি থেকে মেগচামী পর্যন্ত খোয়া উঠে গেছে। সড়কটি দিয়ে ড্রাম ট্রাক ও ভারী যানবাহন চলাচলা করায় কোথায় কোথায় গর্ত তৈরি হয়েছে। গত শুক্রবারের বৃষ্টিতে কিছু কিছু গর্তে পানি জমা হয়ে আছে। সড়কের পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে জমা থাকা ধুলোর আস্তরণ বৃষ্টিতে রং ফিরে পেয়েছে।
দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচল করার সময় বাতাসে কিছু কিছু এলাকায় ধুলাবালুতে একাকার হয়ে যাচ্ছে পুরো এলাকা। নারুয়া বাজারের পর থেকে মৃগী পর্যন্ত রাস্তায় দেয়া খোয়া উঠে গেছে। রাস্তা দিয়ে ট্রাক, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নছিমন, ভ্যান, বাইসাইকেল, ড্রাম ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন যাতায়াত করছে। গাড়ি এলেই ধুলায় এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে একই প্রকল্পের অধীনে বালিয়াকান্দির তালপট্টি থেকে বালিয়াকান্দি ভায়া মধুখালী সড়কের মেগচামী পর্যন্ত ৪.৫৩৫ কিলিমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে। ৬ কোটি ৫১ লাখ ৬১ হাজার ২৬৮ টাকা চুক্তিমূল্যে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর হাবিবুল আলম।
কাজের মেয়াদ ছিল গত ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। ইতোমধ্যে কাজের মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি ঠিকাদারকে জরিমানা করা হয়েছে। কাজের সময় আরও বাড়ানো হয়েছে। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কাজ না করলে টেন্ডার বাতিলসহ ঠিকাদার কালোতালিকাভুক্ত হবে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বালিয়াকান্দি থেকে মধুখালী যাতায়াতের জন্য সড়কটি প্রধান সড়ক হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করে।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। পরে স্থানীয় একজন কাজের দায়িত্ব নেয়। তিনি কাজ কিছুদিন বন্ধ রেখেছিলেন। তবে তাকে কাজ শুরু করার তাগাদা দেয়া হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে আবার কাজ শুরু হবে।’
বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, সড়কের ধুলাবালু এক ধরনের ডাস্ট। এটি সব বয়সের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে। ধুলাবালুতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় শিশু ও বৃদ্ধরা।
বালিয়াকান্দি সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। উপজেলার প্রতি মাসিক মিটিং এ বিষয়টি তুলে ধরি। গত মাসিক মিটিং এ ঠিকাদারের প্রতিনিধি এক মাসের সময় নিয়েছে। আশা করছি জুলাই মাসের মধ্যে সড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ হবে।
টিএইচ