বিএনপির রাজনীতি পুরোটাই ষড়যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিএনপি বুঝতে পেরেছে, তাদের সঙ্গে জনগণ নেই।
১০ লাখ মানুষের সমাবেশ করবে বলে তারা সেখানে বড় জোর ৫০/৬০ হাজার মানুষ জমায়েত করতে পেরেছে। এরপর থেকেই বিএনপি আসলে হতাশ। তাদের রাজনীতি পুরোটাই ষড়যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। সেই কারণেই তারা একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানজী পুকুর পাড়ে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমিছিলের নামে বিএনপি-জামায়াত ঢাকা শহরে একটা বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুরো ঢাকা শহরজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয়নি। এরপরও বিএনপির প্রধান সহযোগী জামায়াত ইসলামী পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। পুলিশ বাহিনীর ধৈর্যের কারণে তারা সেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারেনি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বিদেশিদের পদলেহন করার নীতি অবলম্বন করেছে। সেটি করেও কোনও লাভ হয়নি। তারা যেভাবে মনে করেছিল, বিভিন্ন রাষ্ট্র বা দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের পক্ষে নানা ধরনের কথা বলবেন, সেটি আপনারাও দেখতে পারছেন, সেটি হয়নি।
তাদের রাজনীতিটা একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। অর্থাৎ দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। দেশের জনগণ সেটি কোনোভাবেই হতে দেবে না। বিশৃঙ্খলা তৈরি করার উদ্দেশ্যেই তারা নানা কর্মসূচি দিয়েছে। সেই কর্মসূচিতে তাদের কর্মীদের উপস্থিতি যেভাবে আশা করেছিল, সেভাবে হয়নি।’
বিএনপি এখন আবার ২০১২/১৩ সালের রাজনীতির দিকে যাচ্ছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, তাদের রাজনীতি সেই একই জায়গায় আছে। গত ১০ ডিসেম্বরও তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এখনও সুযোগ পেলে একই কাজ করবে। তারা সেখান থেকে সরে আসতে পারেনি। তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর সারাদেশ কিভাবে উল্লসিত ছিল। সবাই পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ এমনকি পাকিস্তানও অভিনন্দন জানিয়েছে, কিন্তু বিএনপি সেই অনুষ্ঠানে যোগদান করেনি। মেট্টোরেল উদ্বোধনের পর ঢাকা শহরের মানুষের মধ্যে যে উচ্ছাস, সেই মেট্টোরেল নিয়েও বিএনপি ধুম্রজাল সৃষ্টির অপচেষ্ঠা চালিয়েছিল।
মানুষের উচ্ছাসে তাদের সেই অপচেষ্ঠো ভেসে গেছে। সেইকারণে বড় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো নিয়ে নানাধরণের বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্ঠা করে। সবশেষে সবছাপিয়ে মেট্টারেল, পদ্মাসেতু, কর্ণফুলি টানেল, পায়রা বন্দর, চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল, কক্সবাজারসহ সারাদেশ জুড়ে যে উন্নয়ন কর্মকান্ড এতে বাংলাদেশের মানুষ উচ্ছাসিত।
নিজের দলীয় পদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে যখনই যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তখনই সে দায়িত্ব আমি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি। আমি ১০ বছর দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, সাত বছর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, গত তিন বছর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। এসব দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি।
আবারও আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন আমার নেত্রী। আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, এখন আমার দায়িত্ব হচ্ছে নিজেকে উজাড় করে দলের জন্য কাজ করা। প্রয়োজনে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হলেও দাঁড়ানো এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা।’
টিএইচ