শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ে ৮ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ে ৮ জনের মৃত্যু

জেলায় কালবৈশাখী হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। রোববার (৭ এপ্রিল) সকালে এসব ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত-  

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে কালবৈশাখী ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এসময় রাতুল (১৪) ও সুফিয়া বেগম (৮৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। 

রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ৩৫ মিনিট এ ঝড় স্থায়ী হয়। এতে বাউফলের বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক আধাপাকা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। নিহত রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। আর সুফিয়া বেগম দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। ঘরের ওপর গাছ পড়ে তিনি মারা যান। এ ছাড়া গোসিংগা গ্রামের আফসেরের গ্রেজ এলাকায় ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে মা সাবিহা (৩০), তার মেয়ে ইভা (১২) ও দুই বছর বয়সী আরেক শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে পুরো উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। উপড়ে পড়ে রয়েছে প্রায় শতাধিক গাছপালা। এসময় সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে একটি গরুরও মৃত্যু হয়।

ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে বজ্রাঘাতে দুই নারী ও এক শিশু নিহত হয়েছেন। এরা হলেন- হেলেনা বেগম (৪০), মিনারা বেগম (৩৫) ও মাহিয়া আক্তার ঈশানা ( ১১)। রোববার বেলা ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হেলেনা বেগমের বাড়ি ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামে, মিনারা বেগমের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট গ্রামে ও মাহিয়া আক্তার ঈশানের বাড়ি পোনাবালিয়া গ্রামে। এর মধ্যে হেলেনা বেগম ও মিনারা বেগম গৃহিণী এবং মাহিয়া আক্তার ঈশানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে ঝালকাঠির আকাশ কালো মেঘে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে রাতের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে বৃষ্টি ও দমকা বাতাস হয়ে গেছে।

পিরোজপুর: পিরোজপুরে কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কয়েকশ বাড়িঘর। এ ঝড়ে গাছ পড়ে রুবি বেগম (২৩) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মেহজাবীন নামে ওই নারীর ৬ বছরের মেয়েসহ ১৩ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঝড় শুরু হয়। আধাঘণ্টা ব্যাপী এই মৌসুমি ঝড়ে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গাছপালা পড়ে থাকায় বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। মৃত রুবি বেগম পিরোজপুর পৌরসভার হুলারহাট এলাকার মিরাজ সরদারের স্ত্রী।

এই বিষয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রমজান আলী বলেন, ঝড়ের পর রুবি বেগম নামে এক নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ওই নারীর মেয়েও আহত হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বাগেরহাট : বাগেরহাটে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম নিক্সন সরদার (৩৫)। তিনি কচুয়া উপজেলার চর সোনারকুড় গ্রামের বাসিন্দা। রোববার (৭ এপ্রিল) সকালে ঝড়ের সময় গ্রামের মাঠে থাকা গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে তিনি নিহত হন।

এদিকে ঝড়ের পর থেকে বাগেরহাট পৌর শহরসহ সদর উপজেলার প্রায় সব এলাকায় বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন আছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, আকস্মিক ঝড়ে সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার ঘরবাড়ি, গাছপালা উপড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। কচুয়াতে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

নেত্রকোণা: নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের রাজঘাট হাওরে এই ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম শহিদ মিয়া (৫২)। তিনি উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার কৃষক শহিদ মিয়া রাজঘাট নামক এক হাওরে নিজ জমিতে কাঁচা মরিচখেতে পরিচর্যা করছিলেন। সকাল ১১টার দিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি  শুরু হয়। এরমধ্যে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে স্থানীয় কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়।

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন কুমার সাহা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

টিএইচ