দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। খুলনার ডুমুরিয়ায় পাঁচজন, কুষ্টিয়ায় মা-ছেলে ও ফেনীতে একজন নিহত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—
খুলনা ব্যুরো : খুলনার ডুমুরিয়ায় ট্রাক-ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিকালে উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের আঙ্গারদোহা গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, আঙ্গারদোহা গ্রামের হান্নান মোড়লের ছেলে সাব্বির মোড়ল, জিয়েলতলা গ্রামের বিষ্ণু বিশ্বাসের ছেলে ইজিবাইক চালক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের মেয়ে ওড়নি বিশ্বাস, বিল পাবলা গ্রামের অপি ঢালীর স্ত্রী নিপা ঢালী, অপি ঢালীর মা অমড়ী ঢালী।
এছাড়া এ ঘটনায় আরো ২ জন আহত হয়েছে। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত এবং আহতরা সবাই ইজিবাইকের যাত্রী।
ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত সাহা জানান, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের আঙ্গারদোহা এলাকায় সাতক্ষীরাগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে খুলনা অভিমুখী একটি ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে। তবে ট্রাকের চালক ও হেল্পার পালিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন জানান, দুর্ঘটনার পর খুলনা - সাতক্ষীরা মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা চেষ্টা চালিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় মা-ছেলে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রহমত আলী নামে এক সেনা সদস্য আহত হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের বাঁধবাজার পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন জোড়া পুকুর এলাকায় এদুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-সালমা খাতুন ও তার শিশু সন্তান স্মরণ। তারা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন রহমত আলী নামে এক সেনা সদস্য। আহত সেনা সদস্য রহমত আলী সৈয়দপুর সেনানিবাসে কর্মরত।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের বাঁধবাজার পাইকপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে আহত সেনা সদস্য রহমত আলী তার স্ত্রী সালমা খাতুন ও শিশু সন্তান স্মরণকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে যাচ্ছিলেন পথে বাঁধবাজার পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন জোড়া পুকুর এলাকায় পৌঁছালে সামনে থেকে একটি ড্রাম ট্রাক তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সালমা খাতুন ও তার শিশু সন্তান স্মরণ। কুমারখালী থানার ওসি মো. আকিবুল ইসলাম জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক ড্রাম ট্রাকটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ফেনী : ফেনীতে মাটিকাটার এস্কেভেটর চাপায় মো. লিমন (১৩) নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। গত শুক্রবার রাতে ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর এলাকাযর ধর্মপুর সড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ধর্মপুরের বটতলীর দিকে যাচ্ছিল। এ সময় অপরদিকে মাটিকাটার এস্কেভেটরটি শহরের দিক থেকে সেখানে পৌঁছলে একটি অপরটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এরপর ছুটে এসে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. লিমন মারা যায়। সে সুলতানাপুর এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। তার পিতার নাম জামাল উদ্দিন।
এছাড়া সিএনজি অটোরিকশার আহত যাত্রী মুন্না ও রাতুলকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাকিব, শাকিল ও রাকিব ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সুজন জানান, আহত পাঁচজনদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা ফেনীতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ফেনী এসআই দ মো. এমরান জানান, নিহতের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। ঘাতক এস্কেভেটরটি আটক করা হয়েছে। তবে, চালক পলাতক রয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি অটোরিকশাটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
টিএইচ