অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সাবরেজিস্ট্রার অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুদক। গত বৃহস্পতিবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দিনাজপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে উপসহকারী পরিচালক মোছা. কামরুন নাহার সরকার, সহকারী পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান, উচ্চমান সহকারী মো. শাহাজাহান আলীসহ মোট চারজনের একটি দল অভিযানে অংশ নেন। টানা দেড়ঘণ্টা অভিযানে সাবরেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভুক্তভোগীর জবানবন্দী গ্রহণ এবং অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিক্সসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করে দুদক কর্মকর্তারা।
তদন্ত শেষে দুদক কর্মকর্তারা চলে যেতে চাইলে সাবরেজিস্ট্রার অফিসের মূল ফটক বন্ধ করে সাবরেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করে ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় জনগণ। পরে পুলিশের সহযোগিতায় সাবরেজিস্ট্রার অফিস ত্যাগ করেন দুদক কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বাবার নামের বাটোয়ারা জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করতে গেলে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া সাব রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডল জমি রেজিস্ট্রি করবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে মুহুরির মাধ্যমে অতিরিক্ত ৬ হাজার টাকা ঘুস দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে হয়েছে।
অপর ভুক্তভোগী ঠাকুরগাঁও জেলার গড়েয়ার মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ভায়া দলিল এবং মাঠপর্চা না থাকলে নামজারী থাকার পরেও বাটোয়ারা দলিল চায়। না থাকলে অতিরিক্ত ৭ হাজার টাকা ফি দাবি করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বীরগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার অফিসার রিপন চন্দ্র মণ্ডল বলেন, আমি সরকারি বিধি মোতাবেক দলিল সম্পন্ন করে থাকি। কোন পাবলিক সরাসরি আমার কাছে আসে নাই। এজন্য আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ করেছে আমি বিষয়টি জানি না।
অভিযানের বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদকের হট লাইন ১০৬ নাম্বারে কল করে প্রধান কার্যালয় দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগী। সেই অভিযোগ তদন্তে কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক আমরা এখানে এসেছি। গোপনে তথ্য সংগ্রহ করি।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান শুরু করা হয়। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছি। সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত তথ্য রিপোর্ট আকারে কমিশনের কাছে দাখিল করা হবে। পরবর্তীতে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।
টিএইচ