শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post
বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ

বেড়ার খালবিলে চায়না দুয়ারিতে সয়লাব  

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

বেড়ার খালবিলে চায়না দুয়ারিতে সয়লাব  

পাবনার বেড়া উপজেলার নদ-নদী, খাল-বিল হাওর-বাওরগুলোতে কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি জালে সয়লাব। যার ফলে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ হরেক রকমের দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লোহার রডের গোলাকার বা চতুর্ভুজ আকৃতির কাঠামোর চারপাশে ‘চায়না জাল’ দিয়ে ঘিরে এই চায়না দুয়ারি নতুন ফাঁদ তৈরি করা হয়। ক্ষেত্রভেদে ‘চায়না দুয়ারি’ ৫২ হাত আবার ৭০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। এই ফাঁদ দিয়ে  উপজেলার নদ-নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ে অভিনব কায়দায় মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির অসৎ  জেলে ও মৌসুমী মৎস্য শিকারী। 

এক্ষেত্রে অসাধু জেলেরা মানছেন না মৎস্য  অধিদপ্তরের মৎস্য নিধন আইন। যার ফলে কমছে দেশীয় মাছের উৎপাদন। এ জালে মাছ ধরার চিত্র দিনের বেলা কম থাকলেও সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে অসাধু জেলেদের মাছ ধরার মহোৎসব। 

এ দৃশ্য চোখে পড়বে উপজেলার কাজীরহাট, নগরবাড়ি, ঢালারচর, বক্তারপুর, নাটিয়াবাড়ি, পাচুরিয়া, চাকলা, তাঁরাপুর, কৈটোলা, আওয়ালবাঁধ, নাকালিয়া, পেচাকোলা, মোহনগঞ্জ, চর সাঁড়াশিয়াসহ নদীর তীরবর্তী অসংখ্য জনপদগুলোতে। স্থানীয় বাজার থেকে অবৈধ এসব নিষিদ্ধ জাল কিনে এনে বিভিন্ন জলাশয়গুলোতে ব্যবহার করে নিধন করা হচ্ছে পোনা জাতীয় ছোট মাছ এবং  ডিমওয়ালা মা মাছ। 

সেই সাথে নিধন হচ্ছে কাঁকড়া, কুঁচিয়া, ব্যাঙ, শামুক, জোঁক, কচ্ছপসহ বিভিন্ন রকমের জলজ প্রাণী। এ জাল ব্যবহারের প্রভাবে জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়বে এবং ভবিষ্যতে দেশীয় প্রজাতির মাছ চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল এবং এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, অসৎ মৌসুমী জেলেরা এ কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ মৎস্য বিভাগের অতৎপরতায় জাল ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট গভীর সখ্যতায় প্রতিটি বাজারে হরহামেশাই ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে নিষিদ্ধ এসব অবৈধ কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারিসহ দেশীয় মাছ শিকারের বিভিন্ন ফাঁদ। 

উপজেলার চর সাঁড়াশিয়া গ্রামের কৃষক আ. সাত্তার বলেন, ভয়ংকর চায়না দুয়ারি জালে উভয় দিক থেকে ছুটে আসা যেকোনো মাছ খুব সহজেই এই জালে আটকা পড়ে যায়। একবার আটকে গেলে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন জানান, জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়া মডেল থানা পুলিশ, আমিনপুর থানা পুলিশ ও নগরবাড়ী নৌ-পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

টিএইচ