কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ। এদের মধ্যে বোরকা পরা তিন সন্ত্রাসীর একজন ও সহায়তাকারীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব এবং কিলিং মিশনে ব্যবহূত অত্যাধুনিক ৩টি অস্ত্র ও মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার দুইজন হচ্ছেন, বোরকা পরা তিন সন্ত্রাসীর একজন মো. দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু (৩১)। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার চর চারুয়া গ্রামের মৃত জাহেদ আলীর ছেলে। তাকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ২টি হত্যাসহ ৬টি মামলা রয়েছে।
অপরজন ঘাতকদের দেশের ভিতরে ও বাইরে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী জেলার তিতাস উপজেলার বড় গাজীপুর গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে মো. সাহিদুল ইসলাম ওরফে সাদ্দাম মাস্টার (৩৩)। তাকে তিতাস উপজেলার গাজীপুর এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ (হোনা গাজী বাড়ি) গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. মাজহারুল ইসলাম সৈকত (২৪)। তাকে জেলার বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তারসহ অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়।
সে দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। এ নিয়ে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যার ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জামাল হোসেনের হত্যার সময় বোরকা পরা তিন সন্ত্রাসীর নাম-পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। বোরকা পরে গুলি করা ওই তিন সন্ত্রাসী হচ্ছে- দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু, কালা মনির ও আরিফ। বোরকা পরে গুলি করা গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী সাদ্দাম মাস্টারকে দাউদকান্দি থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
গতকার সকাল ১১টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে দেয়া প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা গেছে, জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত অস্ত্র ও গুলি এবং ঘটনার সময়ে আসামিরা একে অন্যের সাথে যোগাযোগের জন্য তাদের ব্যবহূত মোবাইল ফোনগুলো দেবিদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের মাজহারুল ইসলাম সৈকতের নিকট রয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে তাকে বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার চান্দিনা উপজেলা পরিষদে যাওয়ার রাস্তার পাশের একটি ঝোপ থেকে অস্ত্রের একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ওই ব্যাগ থেকে ২টি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলবার, ২৪ রাউন্ড গুলি, ২টি নেকাব ও ১টি জিন্স প্যান্ট উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া জানান, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার মাজহারুল ইসলাম সৈকতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া এর আগে গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, জেলা গোয়েন্দা (ডিবির) ওসি রাজেশ বড়ুয়া।
টিএইচ