নাটোরের বড়াইগ্রামের আহম্মেদপুরে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে লাখ লাখ টাকা টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। মসজিদের নামে রশিদ ছাপিয়ে এ চাঁদা উত্তোলন করা হলেও মসজিদের তহবিলে কোন টাকা দেয়া হয়না বলে জানা গেছে। এসব অনিয়ম বন্ধ ও সরকারি স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
জানা যায়, আহম্মেদপুরে সরকারিভাবে কোন পশুর হাটের অনুমোদন নেই। কিন্তু স্থানীয় সরকার দলীয় কিছু সংখ্যক লোক আহম্মেদপুর বাজার ও বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের উন্নতিকল্পে ছাগল হাট নাম দিয়ে অবৈধভাবে এ হাট বসিয়ে আসছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ইজারাবিহীনভাবে হাট বসানো ও টোল আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ।
কিন্তু তারা প্রতি শুক্রবার এখানে ছাগলের হাট বসিয়ে মসজিদের নামে রশিদ ছাপিয়ে বছরের অন্য সময়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা হাসিল (টোল) আদায় করে। এছাড়া ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়মের প্রতিকারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
শুক্রবার (৭ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আহম্মেদপুর বাজারের পুরো রাস্তা জুড়ে বসেছে ছাগলের হাট। পুরো হাটজুড়ে শত শত ছাগল-ভেড়া কেনাবেচা হচ্ছে। হাটের তিনটি পয়েন্টে মসজিদের নামে ছাপানো রশিদ দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই টোল আদায় করছেন ১৫-২০ জন যুবক।
এ ব্যাপারে আহম্মেদপুর বাজার ও হাট ইজারাদার এসএম কামরুজ্জামান রউফ জানান, প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার তারা এখানে ছাগলের হাট বসায়। প্রতি হাটে শত শত ছাগল, ভেড়া-খাসি কেনা-বেচা হয়। স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা ইসাহাক আলী ও যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের লোকজন ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে চাঁদা তোলে।
বছরের অন্য সময় ৩০-৪০ হাজার টাকা আদায় হলেও ঈদের সময় প্রতি হাটে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কিন্তু আমি ইজারাদার হয়েও একটাকাও পাই না, সরকারও কোন রাজস্ব পায় না।
আহম্মেদপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জরিপ আলী মৃধা বলেন, তারা মসজিদের উন্নয়নের কথা বলে হাট বসিয়ে চাঁদা তুললেও মসজিদের তহবিলে কোন টাকা দেয় না। সব টাকা নিজেরাই ভাগাভাগি করে নিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ছাগল হাট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জোয়াড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে মসজিদের নামেই এ হাটটি চলে। আদায় করা টাকার একটি অংশ আমরা মসজিদের জন্য জমা রেখেছি। কিন্তু আমাদের আগে যারা হাট চালাতো, তারা মসজিদের টাকার সঠিক হিসাব না দেয়ায় আমরাও জমা রাখা টাকা দিচ্ছি না।
ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন আসায় বিষয়টি জানা ছিল না। সরকারি অনুমোদন ছাড়া হাট বসানোর কোন সুযোগ নেই। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এ অবৈধ হাট বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ