কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জাসদ সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলিবিদ্ধ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার আট দিন পর বুধবার (৯ আগস্ট) সকালে সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক মারা যায়।
মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ভেড়ামারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম শিশির ও নিহতর স্ত্রী বিথী রানী, ভাই সম্পদ কুমার প্রামাণিক। এই খবর ভেড়ামারায় মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বুধবার (৯ আগস্ট)সকালে ভেড়ামারা-দৌলতপুর মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
মোড়ে মোড়ে টায়ের জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মামলার প্রধান আসামি জাসদ নেতা মুস্তাফিজুর রহমান শোভন, জানবার আলী, রবি মেকারসহ ইয়ামিনের বাড়িতে বিক্ষুব্ধরা আগুন লাগিয়ে দেয়।
শহরের চার রাস্তা মোড় জাসদ নেতা শোভনে অফিসে আগুন ধরে দিলে সে খানে দুটি নাইন এমএম অস্ত্র পিস্তুল পাওয়া যায়। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ডাবলু কাউন্সিলারের ডিস অফিস, জাসদ নেতা ইয়ামিনের দোকান ও জানবারের দোকান ভাঙচুর ও আগুন ধরে দেয়।
প্রায় ৫ ঘণ্টাব্যাপী শহরের রাস্তাঘাট অবরোধ করে রাখা হয়। বেলা সাড়ে ১২টার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের কর্মী পাঁচজন ও একজন পুলিশ আহত হয়। আহতরা হলেন— লিটন (৩২), সুমন (৩৫), স্বপন (৪৫), সুজ্জল (২৮), কামাল (৩৮)সহ একজন পুলিশ রিয়াজুল আহত হয়।
ভেড়ামারা শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলে ভেড়ামারা ও দৌলতপুর থানার অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হয় শহরে। মামলার চারজন আসামিদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। আগুন নিভাতে ভেড়ামারা ও মিরপুরের ফায়ার সার্ভিসের দুট ইউনিট কাজ করতে দেখা যায়।
সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকে গুলি করে আহত ঘটনায় তার স্ত্রী বিথী রাণী বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ১৪ জন জাসদ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় মামলা করে। মামলায় প্রধান আসামি সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) যুবজোটের জেলা ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান শোভন ও ১১ নং আসামি মোমিনসহ দুজনকে ভেড়ামারা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সোলাইমান হোসেন বলেন, হামলার নেতৃত্ব দেয়া মোস্তাফিজুর রহমান শোভন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সে এ পর্যন্ত বহুজনকে আহত করেছে। আগামী দুর্গাপূজা উদযাপন মেলার মাঠ দখল নিতে হিন্দু সমপ্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালায় এই শোভন ও তার ক্যাডার বাহিনী।
আমাদের দলের নেতা সঞ্জয় প্রামাণিকের প্রতিবাদ করে। এই আক্রোশে সঞ্জয় প্রামাণিককে গুলি করে হত্যা করে। অস্ত্র উদ্ধারসহ সব আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
ভেড়ামারা থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই মূলত এ ঘটনা। ওইদিন কর ঘটনার বিবরণ দিয়ে আহত গুলিবিদ্ধ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের স্ত্রী বিথী রানী বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেন।
ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা ও জোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ রফিকুল ইসলাম চুনু, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শামিমুল ইসলাম ছানা।
টিএইচ