ভোলায় সদর উপজেলার পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত শিশুকে, যেই স্পর্শ করেছে সেই অসুস্থ্ হয়ে পড়ছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পশ্চিম ইলিশা ৪নং ওয়ার্ডে পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে অসুস্থ্য শিক্ষার্থীরা ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, ক্লাস চলাকালীন সময়ে এক শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাকে সেবা দিতে গিয়ে আরো ২৯ শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে যায়। অর্থাৎ ওই ছাত্রকে যে-ই স্পর্শ করেছে সে-ই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে।
পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদ বলেন, গনিত স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছেন। হঠাৎ করে আমি মাথা ঘুরে পরে যায়। এমনভাবে মাথা ব্যাথা উঠছে মনে হয়েছে চুলগুলো উঠিয়ে ফেলি। আমার এমন অবস্থা দেখে স্যাররা আমাকে লাইব্রেরিতে নিয়ে যায়। পরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে।
সিয়াম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমার সঙ্গে একটা ছাত্র হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। তাকে ধরতে গিয়ে একে একে আমরা ৩০/৩৫ জনের মত অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি।
ক্লাস শিক্ষক আবু ছাঈদ বলেন, আমি ক্লাস নিচ্ছি, এমন সময় জিহাদ অসুস্থ্য হলে তাকে অন্যদের ধরতে বলি। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখি যেই ধরে সেই একটা চিৎকার দিয়ে ঘুরে পরে যায়। আমার ও মাথা ঘুরেছে এবং চোখ দিয়ে হঠাৎ পানি পরা শুরু করেছে।
আবু কালাম নামের এক অভিভাবক বলেন, স্কুল থেকে এক স্যারে বাড়িতে ফোন দিয়ে বলেছে আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে দেখি কেউ মাথা থাপ্পরাচ্ছে আর কেউ অজ্ঞান অবস্থায় আছে। যে ধরে সেই অসুস্থ হয়ে যায়। এখন এটা কি রোগ সেটা তো জানি না।
দক্ষিণ চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, আমরা বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করে তার বাবা মাকে খবর দিয়েছি এবং ওই ছাত্রকে প্রাথমিক সেবা দিচ্ছি এরমধ্যেই দেখি যারাই এ ছাত্রকে ধরে সেই একটা চিৎকার দিয়ে মাথা ঘুরিয়ে পরে যায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, স্কুল থেকে বাসায় গিয়েও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছ। তাদের ও হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনায় স্কুলে ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভোলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তায়েবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ২৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আরো আসছে। আমরা সবাইকে চিকিৎসা দিচ্ছি এবং কাউন্সিলিং করছি। আশা করি দ্রুতই তারা সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।
টিএইচ