শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

মহুরি নদীর আরও দুই স্থানে ভাঙন পানিবন্দী ২৭ হাজার পরিবার 

ফেনী প্রতিনিধি

মহুরি নদীর আরও দুই স্থানে ভাঙন পানিবন্দী ২৭ হাজার পরিবার 

টানা বর্ষন ও ভারতীয় উজানের ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের নতুন করে দুটিসহ ১২টি স্থান ভেঙে জেলার পরশুরাম-ফুলগাজীতে আরও ১৮ হাজার বেড়ে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে ২৭ হাজার পরিবার। রোববার (৪ আগস্ট) ওই দুই ইউএনও কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এছাড়া ১ হাজার ১৭৭ হেক্টর কৃষিজমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

পরশুরাম ইউএনও আফরোজা হাবিব শাপলা এ জানান, পৌরসভার বেঁড়াবাড়ির দুটি স্থানে, এবং বাউরখুমার দুটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়, এতে করে বাউরখুমা, বাউরপাথর, বিলোনিয়া, দুবলাচাঁদ, বেড়াবাড়িয়া, উত্তর গুথুমা, কোলাপাড়া এবং বাসপদুয়া গ্রামে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।

মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম মির্জানগর এবং কাউতলীর দুটি স্থানে ভাঙনের ফলে উত্তর মনিপুর, দক্ষিণ মণিপুর, কালী কৃষ্ণনগর, গদানগর, উত্তর কাউতলী, দক্ষিণ কাউতলী, দাসপাড়া, চম্পকনগর, মেলাঘর, গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। 

চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধর, মালীপাথর, পশ্চিম অলকার দুটি স্থানসহ মোট ০৪ স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয় এতে করে পূর্ব অলকা, পশ্চিম অলকা, নোয়াপুর, ধনীকুন্ডা, দক্ষিণ শালধর, জংঙ্গলঘোনা, কুন্ডেরপাড়, মালীপাথর ও পাগলীরকুল গ্রামে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। 

বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের টেটেশ্বর এবং সাতকুচিয়া নামক দুটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয় এতে করে সাতকুচিয়া, জমিয়ারগাঁও, বাঘমারা, চারিগ্রাম, টেটেশ্বর, কহুয়া,গুথুমা, নরনীয়া, কেতরাংগা, মোহাম্মদপুর, তালবাড়িয়া গ্রামে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। 

এখন পর্যন্ত এ পরশুরামের ১২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২০০ প্যাকেট  শুকনা খাবার ও ১৩ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে আরও ৮০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১০০ টন চাল। ৭১০ হেক্টর কৃষিজমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।

ফুলগাজী ইউএনও তানিয়া ভূইয়া জানান, মুহুরী, সিলোনিয়া, কহুয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফুলগাজী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে সদর ইউনিয়নের নিলক্ষী, গাবতলা, মনতলা, গোসাইপুর, শ্রীপুর, বাসুরা, দেড়পারা, উত্তর দৌলতপুর ও মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বদরপুর, মান্দারপুর, করইয়া, কালিকাপুর, কামাল্লা, নোয়াপুর, পৈথারা, জাম্মুরা, ফকিরের খিল, কমুয়া, বালুয়া, চানপুর, দক্ষিণ তাড়ালিয়া, দক্ষিণ শ্রীপুর, কুতুবপুর, ফতেহপুর, উত্তর আনন্দপুর এবং দরবারপুর ইউনিয়নের জগৎপুর, বসন্তপুর, ধলীয়া, চকবস্তা, উত্তর শ্রীপুর, বড়ইয়া, পশ্চিম দরবারপুর, পূর্ব দরবারপুর এছাড়া আমজাদহাট ইউনিয়নের তালবারিয়া, উত্তরধর্মপুর, দক্ষিণ ধর্মপুর, মনিপুর, ইসলামিয়া বাজার ও আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া, দৌলতপুর, তালপুকুরিয়া এবং জিএম হাট ইউনিয়নের মধ্যম শ্রীচন্দ্রপুরসহ মোট ৪৩টি গ্রামে পানিবন্দী পরিবার সংখ্যা ৭হাজার ৮শ পরিবার। 

তিনি আরও জানান, এ উপজেলায় মুহুরী, সিলোনিয়া নদীর বাধে কোন ফাটল না দেখা দিলেও বাঁধ উপচে বন্যার পানি বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে। বর্তমানে ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক ফুলগাজী এবং পরশুরাম অংশে প্লাবিত হওয়ায় কার্যত জেলা হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ১১০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ ও ৫০ টন চাল উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে আরও ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১৮ টন চাল। নিমজ্জিত কৃষি জমির পরিমাণ ৪৬৬ হেক্টর।

টিএইচ