কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ভূমিদস্যুরা। চতুর্দিকে স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে ধুমধামে নিধন করে যাচ্ছে খাল, বিল ও প্যারাবন। রাতের আঁধার নামলেই অস্ত্রের ঝনঝনানি। হাজার হাজার একর সরকারি প্যারাবন ধ্বংসের পর এবার দখল করতে নেমেছে সরকারি খালগুলো।
গত ১৮মে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়া কাটা থেকে শুরু করে ঘটিভাঙ্গা হয়ে পচ্চিম দিকে প্রায় দুই হাজার একর সরকারি প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের তৈরি করেছে ভূমিদস্যুরা।
সর্বশেষ সরকারি খালগুলো দখলে নজর দিয়েছে তারা, ছোট ছোট কিছু খাল দখলের পর তারা হাত দিয়েছে মহেশখালীর ঐতিহাসিক তিনশ বছরের পুরাতন কবুতরের দিয়া সরকারি খাল দখলে, যেই খাল দিয়ে বহু চিংড়ি প্রজেক্ট, স্থানীয়দের মালামাল উঠানামা এবং গরীব জেলেরা জাল দিয়ে মাছ শিকার করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাদের এলাকা ছেড়ে পালানো ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। অন্যদিকে রোববার (১৯ মে) মহেশখালীর উত্তর প্রান্তে কালারমারছড়া ইউনিয়নে ঝাপুয়া নামক গ্রামের পশ্চিম দিকে আরও একটি পুরাতন খাল দখল করতে কাজ চলমান রেখেছে ভূমিদস্যুরা।
মহেশখালীর সাধারণ মানুষের তথ্য মতে, বর্তমানে পুরো মহেশখালী জুড়ে প্যারাবনের ভিতরে ও বাহিরে শতাধিক স্কেভেটর গাড়ি প্যারাবন নিধন ও মাটি কাটার কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
ড্রেজার নামিয়ে নষ্ট করে যাচ্ছে মানুষের বাড়ি ঘর। রাতের আঁধারে মানুষকে আতঙ্কে রাখতে বন খেকোরা ব্যবহার করছে ভারী অবৈধ অস্ত্র। ভূমিদস্যুরা শতকোটি টাকার মালিকের পাশাপাশি অস্ত্রেরও মালিক ফলে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ সাধারণ জনতা।
জানাযায়, ১৯৯১ এর ঘুর্ণিঝড়ের পর মহেশখালী দ্বীপ রক্ষায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে সরকার এই প্যারাবন রোপণ করেছিল কিন্তু আজ প্রভাবশালী ভূমি খেকোরা সরকারের হাজার কোটি টাকার সম্পদ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। এসব পরিবেশ বিধ্বংসী রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য পরিবেশ বাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) কক্সবাজার জেলা ও মহেশখালীর নেতারা ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
কবুতরের দিয়া সরকারি খাল দখলের বিষয়ে মহেশখালী বিট কর্মকর্তা মুহাম্মদ আয়ুব আলীকে ফোন দিলে তিনি জানান, খাল দখল বিষয়ে তিনি অবগত নন তবে সরকারি খাল কাউকে দখল করতে দেয়া হবে না, কেউ দখল করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিকী মারমা জানান সরকারি খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ