দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী উপজেলা আলমডাঙ্গা। আয়তনে চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্ব বৃহত্তম এ উপজেলা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর জেলার সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসার বড় রুট বা পথ হিসেবে পরিচিত। উপজেলায় প্রায় সময়ই গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন ও মদের ছোট-বড় চালান ধরা পড়ে।
এসব ঘটনায় ইজিবাইকচালক, কিশোর- তরুণ, বেকার যুবকসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষ ধরা পড়লেও এরা মূলত মাদক বহনকারী। মাদক পাচারের মূল হোতারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আলমডাঙ্গা থানা কর্তৃক মাদকবিরোধী অভিযানে ধরা পড়া বেশিরভাগ ব্যক্তি মাদকসেবী ও খুচরা বিক্রেতা। অথচ দেশে মাদকের ভয়াবহতা ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে দায়ী মাদক চোরাকারবারের হোতারা। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে মাদক সরবরাহ সাময়িকভাবে কমলেও এটি নির্মূলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বিকল্প নেই। তাছাড়া খুচরা কারবারিদের পাশাপাশি মূল হোতাদের ধরতে না পারলে অভিযানের মূল লক্ষ ব্যাহত হবে। তাই মাদকের গডফাদারদের ধরতে অভিযান চালানোর কোন বিকল্প নেই।
প্রতিটি-গ্রাম, ইউনিয়ন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাদকের শীর্ষস্থানীয় কারবারিরা গ্রেপ্তার না হলে থামানো যাবে না এ অপরাধ।
উপজেলায় মাদকবহনকারী ও গ্রহণকারী দুই ধরনের অপরাধীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। অথচ কারাগারে নেই মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা। নেই মাদকাসক্ত লোকজনের পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগও। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে লাইসেন্স ছাড়া মাদকদ্রব্য বহন ও ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান আছে।
তবে শুধু সেবনের কারণে গ্রেপ্তারের বিধান নেই। এ সুযোগে মাদক বিক্রেতারা বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে কৌশলে অভিনব কায়দায় মাদক বিক্রি করছে যাতে ধরা পড়লেও আইনে তাদের লঘু সাজার মাধ্যমে বাহির হয়ে আসে। কাজেই মূল হোতারা বাহিরেই থেকে যাচ্ছে এবং ভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে আবারও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
আলমডাঙ্গা থানার দেয়া তথ্যমতে, জুলাই মাসে পুলিশ ১ কেজি ৮শ গ্রাম গাঁজা ৫৯টি ইয়াবা, ১৫২ পিচ ট্যাপেন্টাডল উদ্ধার করেছে। এতে মাদকসংশ্লিষ্ট মামলা হয়েছে ৭টি, মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ জনকে এবং পলাতক আছে ২ জন। এর মধ্যে মাদক ভাগাভাগি নিয়ে একজন খুনও হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে পরিমাণ মাদক ধরা পড়ছে, তার কয়েক গুণ বেশি মাদক এলাকায় প্রবেশ করছে।
টিএইচ