মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার তালতলা-ডহুরী খালে নির্মিত বেইলি সেতু দিয়ে ১১ দিন ধরে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে দুই উপজেলার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে ট্রলার বাণিজ্য শুরু করেছে। এতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ ছাড়া ট্রলার দুটির শ্রমিকরা অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে মুহূর্তের মধ্যেই ঘটে যেতে পারে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই এখনই অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পারাপার বন্ধ করা জরুরি মনে করছেন অনেকেই।
রোববার (২৮ মে) সরেজমিন অপেক্ষমান শতাধিক যাত্রীদের গাদাগাদি করে দুটি ট্রলারের শ্রমিকরা পারাপার করছে। এতে বাধ্য হয়েই যাত্রীদের পারাপার হতে হচ্ছে। দুটি ট্রলারে যাত্রীর চাপে পা রাখার জায়গা নেই।
এক একটি ট্রলারে প্রায় শতাধিক যাত্রী উঠানো হচ্ছে। এতে প্রায়ই ট্রলার দুটি হেলেদুলে উল্টে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে পড়ে। এরপরও শ্রমিকরা বাড়তি টাকার লোভে যাত্রীদের জোরপূর্বক গাদাগাদি করে ট্রলারে উঠাচ্ছে।
আরও দেখা যায়, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ টাকা এবং মোটরসাইকেল ৩০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সন্ধ্যা হলেই মাটরসাইকেল সহযাত্রীর কাছ থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে নেয়। এতে অনেক যাত্রী বলেছে তারা জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। তারা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৩ বছর আগে জেলার সিরাজদীখান ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী তালতলা-ডহুরী খালের ওপর কুন্ডেরবাজার বেইলি সেতু নির্মিত হয়। এদিকে কোনো বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা না করেই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ শুরু হয় ১৬ মে। আর শেষ হবে আগামী ১৬ জুন।
এতে এক মাস যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। জেলা সদরের সঙ্গে সিরাজদীখান ও শ্রীনগর উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে তালতলা-ডহুরী খাল পারাপারে দুটি ট্রলার চালু করা হয়।
সিরাজদীখান উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা নুসরাত জাহান টুম্পা বলেন, আমার বাবার বাড়ি টঙ্গীবাড়ি উপজেলায়, তাই ট্রলারে পার হচ্ছি। ট্রলারে যে পরিমাণ মানুষ উঠিয়েছে, এতে আমার দুই শিশু বাচ্চা নিয়ে ভয়ে ভয়ে খাল পার হতে হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ট্রলারের শ্রমিকরা অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে থাকে, পা ফেলানোর জায়গাও পাওয়া যায় না।
মালখানগর ইউনিয়ন সচিব মো. আমিনুর রহমান বলেন, আমাদের পরিষদ থেকে আমরা কাউকে খাল পারাপারের জন্য ট্রলার দেয়নি। কে বা কারা দিয়েছে সেটা আমি জানি না। তবে কেউ যদি আমাদের নাম ভাঙিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিরাজদীখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম তানভীর বলেন, এখানে ট্রলার চলাচলের ব্যবস্থা করতে আমরা কাউকে অনুমতি দেয়নি, কারা ট্রলার এখানে ব্যবস্থা করেছে আমি জানি না। তবে আমি সরেজমিন দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, আমরা কোনো প্রকার নদী পারাপারের জন্য ট্রলার দেয়নি এবং অনুমতিও দেয়া হয়নি।
টিএইচ