বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

মৌলভীবাজারে চা বাগান কর্মচারীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

মৌলভীবাজার  প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারে চা বাগান কর্মচারীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

চা শিল্পে বাগান স্টাফ কর্মচারীদের অধিকার আদায়, সংরক্ষণ ও তাদের সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন (বিটিইএসএ) এর নেতাকর্মীরা এম. আহমদ টি এন্ড ল্যান্ডস কোং লিমিটেডের মৌলভীবাজার জেলার ৪টিসহ ৮টি চা বাগানে কর্মরত ৯৪ জন কর্মচারীদের বেতন বোনাস, ভাতা, অবসরজনিত আর্থিক ন্যায্য পাওনা না দেয়া ও অন্যায় ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চাকুরিচ্যুত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে মৌলভীবাজারে বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন (রেজিঃ নং-বি-২৫১)। 

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রেস ক্লাবের সামনে বিটিইএসএ আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাকারিয়ার আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুর রহমানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি  শেখ কাউছার মিয়া, কংকন জ্যোতি ভট্টাচার্য্য, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গংগেস রঞ্জন দেব, কোষাধ্যক্ষ সুরঞ্জিত দাস, প্রচার ও সমাজসেবা সম্পাদক  ইব্রাহিম মিয়া সোহেল, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রাসেল প্রমুখ। 

মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, এম. আহমদ টি এন্ড ল্যান্ডস কোং লিমিটেড বাংলাদেশে ৮টি চা বাগানে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় চান্দবাগ, আমিনাবাদ, ফুলবাড়ি ও নূরজাহান এই ৪টি চা বাগান রয়েছে। অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় ওই কোম্পানির বিভিন্ন চা বাগানে কর্মরত কর্মচারী, এমনকি চাকরি হতে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের বিভিন্ন আইনি ও ন্যায্য পাওনাদি কোম্পানির কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করতে চায় না। 

এই সকল ন্যায্য পাওনাদি পরিশোধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন টালবাহানায় কালক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ শ্রম আইন ও প্রচলিত নিয়ম প্রথা ভঙ্গ করা এই কোম্পানির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ওই কোম্পানির নিকট বিভিন্ন চা বাগানের কর্মচারীদের বকেয়া পাওনাদির  গ্র্যাচুয়িটি  ২০১২ সাল থেকে ২২ জন, অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত সদস্যের গ্র্যাচুয়িটি অদ্যাবধি বকেয়া। 

২০২২-২০২৩ এর বকেয়া মজুরী (এরিয়ার) অপরিশোধিত। গ্র্যান্টেড বোনাস  ২০১৮ সাল থেকে অদ্যাবধি বাৎসরিক গ্র্যান্টেড বোনাস অপরিশোধিত। প্রফিট বোনাস  ২০১৮ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রফিট বোনাস অপরিশোধিত। ২০২২ সাল থেকে বাৎসরিক লীভ এলাউন্স অপরিশোধিত। ২০২২ সাল থেকে মেনটেইন্যান্স এলাউন্স অপরিশোধিত। ৫-৬ কোটি টাকা বকেয়া। 

ওই বকেয়া পরিশোধের তাগিদ দিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার সুযোগ চাওয়া হয়েছে কিন্তু তারপরও এ ব্যাপারে সাড়া দেননি বা ন্যুনতম আন্তরিকতা দেখাননি। এরই জের ধরে ১৯শে আগস্ট ওই কোম্পানির চান্দবাগ চা বাগানের ইউনিট প্রতিনিধি আজিজ উদ্দিন আহমেদ (৩য় ফ্যাক্টরি ক্লার্ক) তার ইউনিটের কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধের জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানালে তাকে অন্যায়ভাবে শ্রম আইনে অপপ্রয়োগ করে কর্মচ্যুতির নোটিশ দিয়ে স্ব-পরিবারে বাগান ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়। 

 তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এমন অন্যায় চলমান থাকলে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না। আমাদের মেধা, শ্রম ও ঘামে চা বাগান সচল থেকে আয়ের মুখ দেখে। আর আমাদের সাথে আইনের পরিপন্থি কার্যকলাপের মাধ্যমে ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত করা হবে।

অন্যায়ভাবে চাকরিচুত্যি করা হবে তা মেনে নিয়ে আমরা ঘরে বসে থাকব এমনটি হবেনা। আমরা আপনাদের কাছে আমাদের ন্যায্য অধিকার চাইছি। অন্যথায় আমরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।  পরে বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহানের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেন। 

টিএইচ