যমুনা বিধৌত ছোট্ট একটি ইউনিয়ন সোনাতুনি। ভাঙন কবলিত এ ইউনিয়নে যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরে বসতি স্থাপন করে গড়ে উঠেছে বারোপাখিয়া, কুরশি, শ্রীপুর, ধীতপুর, চানতারা, ঘোড়জান গ্রাম।
প্রকৃতির লীলাখেলায় যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরই সাঁপে-বর হয়ে গেছে সৌখিন ও পেশাদার খামারিদের জন্য। কেবল বালুচরের প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস খেয়েই হূষ্টপুষ্ট হয়েছে সাড়ে সাত হাজার গরু। পশু অধিদপ্তর জানিয়েছে, কোরবানি উপলক্ষ্যে শুধু সোনাতুনির চরেই প্রস্তুত হয়েছে ১১২ কোটি টাকার পশু।
শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়নের দুর্গম চর বানতিয়ার, কুরশি, ধীতপুর, ছোট চানতারা বড় চানতারাসহ বিস্তীর্ণ চর জুড়ে রয়েছে সবুজ ঘাস। বিভিন্ন গ্রামে প্রত্যেকের থাকার জন্য আটখানা টিনের খুপরি ঘর থাকলেও প্রতিটি বাড়িতেই ২ থেকে ৫টি করে গরু হূষ্টপুষ্ট করেছেন তারা।
দেশীয় ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। ইতোমধ্যে স্থানীয় পশুর হাটগুলোর পাশাপাশি এগুলো রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। বাড়তি লাভের আশায় খামারের পাশাপাশি প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় যত্ন করে লালন পালন করেছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা।
বিভিন্ন বাড়ি ও খামারে তারা স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে দেশি ও বিদেশি জাতের ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, দেশি শংকর, অস্ট্রেলিয়ান, জার্সিসহ বিভিন্ন জাতের ষাঁড় বাছুর ক্রয় করে হূষ্টপুষ্ট করছেন। মাত্র ৬-৮ মাসে এঁড়ে বাছুর লালন পালন করে কোরবানির ঈদের গরুর হাটে বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়েও বিনিয়োগের চেয়ে বেশি অর্থ আয় করতে পারবে বলে খামারিরা আশা প্রকাশ করেছেন।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বিল্লাল হোসেন জানান, আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল সোনাতনী ইউনিয়নের সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ছোলা, সবুজ ঘাস, খৈল, ভুসি, চিটা গুড়, ছোলা, গম, মসুর, কালাই, খেসারি, জব, ভুট্টা খাওয়ায়ে বিভিন্ন গ্রামে ছোট ছোট গো-খামারে দেশি ও বিদেশি জাতের প্রায় সাড়ে সাত হাজার ষাঁড় গরু হূষ্টপুষ্ট করেছে খামারিরা। যার আনুমানিক বিক্রয় মূল্য প্রায় ১১২ কোটি টাকা।
এই দুর্গম চরের মানুষগুলো ফসলের মাঠে কৃষিকাজ বা বাড়ির অন্য কাজের পাশাপাশি ষাঁড় গরু হূষ্টপুষ্ট করে অতি অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে বলেও জানিয়েছেন এলাকাবাসী। একইসাথে এই দুর্গম চর ব্যাপক সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে শৌখিন এবং পেশাদার খামারিদের জন্য।
টিএইচ