সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে পানি বাড়ার হার বেশি হওয়ায় যমুনা অধ্যুষিত নিন্মঞ্চলে বন্যা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এতে ছোট থেকে মাঝারি আকারের বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাশাপাশি বন্যার আগে থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার জালালপুর এলাকায়। গত কয়েকদিনে এলাকাবাসী ফসলি জমিসহ হারিয়েছেন বসতবাড়ি।
সম্প্রতি বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়েছে। ইতোমধ্যেই বিলীন হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। বাস্তুহারা হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তবে সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
পাউবো সূত্রে আরও জানা যায়, জুন মাসের শুরুতে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। ৩ জুন থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়লেও এক সপ্তাহ পর কমতে থাকে। এরপর ১৮ জুন থেকে আবারও বাড়ছে যমুনার পানি।
এদিকে এনায়েতপুর থানার জালালপুর ও খুকনী ইউনিয়নের যমুনা অধ্যুষিত এলাকায় কয়েক বছর ধরেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ভাঙনকবলিত অসংখ্য মানুষ। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসকল এলাকায় ভাঙনও বেড়েছে।
ভাঙনকবলিত এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর তীরবর্তী এলাকায় কাজের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় দেখা দিয়েছে এই নদীভাঙন। এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি ভাঙনকবলিত এলাকাবাসীর।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম এবং ২নং ওয়ার্ডের সদস্য মহির উদ্দিন জানান, প্রতি বছরেরন্যায় এবারও নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এবার বর্ষার আগে থেকেই ভাঙছে যা অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েকদিনে বেশ কিছু ফসলি জমি এবং বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পরেছে। ভাঙন থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি প্রদক্ষেপ নিতে হবে।
খুকনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ জানান, গত কয়েকদিনে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছি, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য কিছু করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, জালালপুর এবং খুকনি ইউনিয়নে নদীভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে ঈদের ছুটি থাকায় ভাঙনরোধে কোনো কাজ করা সম্ভব হয়নি। আপাতত ওই ভাঙনকবলিত এলাকায় জিওটিউব ফেলা শুরু করা হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, আমরা ইতোমধ্যে বাস্তুহারা মানুষের কিছু ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে তীররক্ষা কাজ দ্রুত করার অনুরোধ করছি।
টিএইচ