যশোরে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের পরে হত্যা ও মরদেহ গুমের দায়ে নাজমুল ওরফে বান্দা আলী নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিচারক। রোববার (৫ মার্চ) যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক গোলাম কবীর এ রায়ের আদেশ দেন। যশোর আদালতের স্পেশাল পিপি সেতারা বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুল ওরফে বান্দা আলী যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ঠাকুরকাঠি গ্রামের শের আলীর ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ঠাকুরকাটি গ্রামের কৃষিশ্রমিক মুক্তার আলী বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিবেশী নাজমুল ওরফে বান্দা আলীদের পারিবারিক শত্রুতা ছিল। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকালে মুক্তার আলীর মেয়ে রিক্তা বাড়িতে খেলাধুলা করছিল।
এক পর্যায়ে সে নাজমুলদের বাড়ির উঠানে গেলে নাজমুল সজোরে তাকে চড় মারে। এতে রিক্তা জ্ঞান হারায়। পরে তাকে ঘরের ভেতর নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে শিশুটিকে বস্তাবন্দি করে তার খাটের পাশে রাখে। এরপর তাদের বাড়ির পাশে পুকুরের ধারে গর্ত খুঁড়ে মরদেহ পুঁতে রাখে।
এদিকে মেয়েকে না পেয়ে স্বজনরা তাকে বাড়ির আশেপাশে খুঁজতে থাকেন। এমনকি নাজমুলও তাদের সঙ্গে খোঁজে। বাড়ির পাশের পুকুরে সে জালও টানে। লোকজন পুকুরের ধারে গর্তের কারণ জানতে চাইলে নাজমুল বলে, সেখানে সে আলু লাগাবে। লোকজনের সন্দেহ হলে তারা নাজমুলের ঘর দেখতে চান। কিন্তু সে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছিল না।
একপর্যায়ে তারা ঘরে ঢুকলে নাজমুল সেখানে থেকে পালিয়ে যায়। পরে ঘরের ভেতর খাটের কোনায় তারা বস্তাবন্দি শিশুটির লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওইদিনই নিহত শিশুর বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মকবুল হোসেন ২০২২ সালের ১৭ মে নাজমুলকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত গতকাল আসামি নাজমুল ওরফে বান্দা আলীকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার রায় দেন। রায় শেষে আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
টিএইচ
