সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে লাহিড়ীপাড়া

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে লাহিড়ীপাড়া

উদ্যোগ ও সংরক্ষণের অভাবে সাত রাজকন্যার গ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধাদের সেল্টার সেন্টার নামে খ্যাত নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা লাহিড়ীপাড়ার ইতিহাস এবং ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। একইভাবে লাহিড়ীপাড়া গ্রামের শতবর্ষী মঠ মন্দিরগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

জানা যায়, এক সময় এই গ্রামে ২২ জমিদারের বাস ছিল। অর্ধ বঙ্গেশ্বরী নাটোরের রানী ভবানীর কন্যাসহ ৭ রাজকন্যার বিয়ে হয় এই গ্রামের ৬ জমিদার পুত্রের সঙ্গে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হলে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যায়।

ফলে পর্যায়ক্রমে এসব জমিদার পরিবার তাদের বসতবাড়ি ফেলে রেখে ভারতে চলে যান। জমিদারদের ফেলে যাওয়া বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও দু-একটি বাড়ির চিহ্ন এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এগুলো এখনো অতীত ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করে চলেছে। জমিদারদের বংশধরদের কেউ কেউ এখনো এই গ্রামে সাধারণভাবে বাস করছেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লাহিড়ীপাড়ায় অবস্থান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন প্রচারণা চালায়।

এই উপজেলার বিশাল হালতি বিলের উত্তর দিকের শেষ প্রান্তে এই খাজুরা লাহিড়ীপাড়া গ্রাম। সাত রাজকন্যার গ্রাম বলেই অধিক পরিচিত এই গ্রাম। নাটোর থেকে এই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এই গ্রামের উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। এই গ্রামের ৬ জমিদার পুত্র শামাকান্ত লাহিড়ী, উম্মেকা কান্ত লাহিড়ী, সুরেন্দ্র নাথ লাহিড়ী, রঘুনাথ লাহিড়ী, সুরেন্দ্র মোহন লাহিড়ী ও জীতেন্দ্র নাথ লাহিড়ীর সঙ্গে ৭ রাজকন্যার বিয়ে হয়।

স্থানীয়রা জানান, নাটোরের রানী ভবানীর একমাত্র মেয়ে তারা সুন্দরীর বিয়ে হয় এই গ্রামের জমিদার রঘুনন্দন লাহিড়ীর সঙ্গে। জমিদার শামাকান্ত লাহিড়ী বিয়ে করেন দুই রাজকন্যাকে। প্রথম স্ত্রীর কথা কেউ বলতে না পারলেও দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছার জমিদার কন্যা ইন্দুবালা।

জমিদার শ্যামাকান্ত লাহিড়ীর বংশধর মিঠু কুমার লাহিড়ী ও স্থানীয়রা জানান, যেটুকু আছে তাও সংস্কারের অভাবে ধংস হয়ে যাচ্ছে। এখন কোনভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে লাহিড়ীপাড়া গ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য। তারা জমিদারদের ইতিহাসসহ জমিদারদের স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।

টিএইচ