রাজবাড়ীতে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত প্রতারণা মামলায় মো. রাকিব হাসান শুভ নামে এক ভূয়া চিকিৎসককে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কারাগারে প্রেরণ করেছে। তিনি জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাওনারা গ্রামের মো. সোহরাব হোসেনের ছেলে।
জানাগেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সৌরভ দাস বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৬ জুন মো. রাকিব হাসান শুভর বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশনের এবং এইচএসসি পাশের ভূয়া, জাল সনদ তৈরি করে চাকরিতে যোগদান করে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি অংশের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাত করেন।
মামলার অভিযোগে বলেন, মো. রাকিব হাসান শুভ বিএমডিসি কোয়ালিফিকেশন পরীক্ষায় কয়েকবার অকৃতকার্য হয়েও নামের আগে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করছেন। ২০১৩ সালের জুন মাসে ভূয়া ডাক্তার সাজার কারণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক লাখ টাকা জরিমানা হয়।
ডাক্তার না লেখার অঙ্গীকার করেন। অঙ্গীকার করার পরও জাল রেজিস্ট্রেশন সনদ ও জাল এইচএসসি পাশের সনদ দিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এমএনএইচ প্রজেক্টে মেডিকেল অফিসার হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন। তার দাখিলকৃত কাগজপত্র যাচাই করে জাল-জালিয়াতি প্রমাণিত হয়। এরমধ্যে বেতন ভাতাদি বাবদ এক লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত ১২ জানুয়ারি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী আলীপুর এলাকার ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে রাকিব আহসান শুভকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আল জিনাত।
অভিযানে অংশ নেন র্যাব-১১, সিপিসি-৩ কোম্পানি কমান্ডার মাহমুদুল হাসান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফয়সাল মো. তৌহিদুজ্জামান।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নাম তার হাবিবুর রহমান বাবুল। প্রথম জীবনে ছিলেন স্কুলের শিক্ষক। এ সময় ২৩ লাখ টাকার তহবিল নয়ছয়ের দায়ে চাকরি চলে যায়। এরপর নিজের নাম পাল্টে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে পাশের গ্রামের এক চিকিৎসকের নামে বনে যান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কিন্তু এতেও পার পেলেন না তিনি।
এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানে ধরা পড়েন এবং এক লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে সে যাত্রায় রেহাই পান। কিন্তু থেমে থাকে না তার প্রতারণা। এরপর পুলিশের রেশনের মালামাল সরবরাহের ঠিকাদার হিসেবে শুরু করেন নতুন প্রতারণার কারবার। একে একে চারজন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী তার কথার জাদুতে মুগ্ধ হয়ে তার হাতে তুলে দেন এক কোটি ৮০ লাখ টাকা। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
টিএইচ