কুড়িগ্রামের রাজারহাটের প্রত্যান্ত অঞ্চলে ফাহাদ আল ফারাবী (১৬) নামের এক কিশোর টেলিস্কোপ বানিয়ে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন। পোষা বিড়ালের নামে টেলিস্কোপটির নাম দিয়েছেন নেকো-কে -১। মেধা ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে টেলিস্কোপ বানানো এমন প্রতিভা দেখে খুশি স্বজনরা।
টেলিস্কোপের মাধ্যমে খালি চোখে চাঁদ সূর্যের স্পষ্ট ছবি দেখতে প্রতিদিন লোকজন ভিড় করছে। ফাহাদ আল ফারাবী রাজারহাট উপজেলার মেকুটারী গ্রামের জয়নুল আবেদীন-পারভীন খন্দকারের ছোট ছেলে ফাহাদ আল ফারাবী ছোট বেলা থেকে মহাকাশ সম্পর্কে জানতে খুবই আগ্রহী ছিল। বইয়ের পাতায় গ্রহ নক্ষত্র উপগ্রহের অবস্থান পড়ে দেখার খুব ইচ্ছে হয়।
২০২১ সালের শেষে টেলিস্কোপ বানানো সরঞ্জাম সংগ্রহে নেমে পড়েন। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন টেলিস্কোপ কিনতে পাওয়া যায়। বাজারে একটি টেলিস্কোপ ৪০-৫০ হাজার টাকা। তিনি ২০২৩ সালে নিজেই টেলিস্কোপ বানাতে শুরু করেন। এ কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিলেন ফাহাদ আল ফারাবীর বড় ভাই ফাহমিদ আল জাবের। তিন মাসের মধ্যে টেলিস্কোপ বানাতে পেরে খুশি ফাহাদ আল ফারাবী।
ফাহাদ আল ফারাবী ইচ্ছে সরকারি কোন সহযোগিতা পেলে টেলিস্কোপে আগ্রহীদের মধ্যে স্বল্প দামে সরবরাহ করবেন বলে জানান তিনি। ফাহাদ আল ফারাবী বলেন, ২০২৩ সালে ঢাকার এক এস্ট্রনোমি হাউজ থেকে যন্ত্রপাতিগুলো সংগ্রহ করে টেলিস্কোপটি বানাতে সক্ষম হই।
তিনি আরো বলেন, টেলিস্কোপটি তৈরি করতে মুলত, পিভিসিপাইপ, লেন্স, মাউন্ট, ফোকাল, অ্যাপারচার, মিরর, ফোকাসার, মেটাল থ্রি ডি স্পাইডার ও কাঠের প্রয়োজন হয়েছে। টেলিস্কোপটি ওজন মাত্র ১২ কেজি। এটির মাধ্যমে ৩ লাখ কি.মি দূর থেকে দৃশ্য ধারণ করা যায়। ভবিষ্যৎ আরো উন্নত টেলিস্কোপ ও মাইক্রো টেলিস্কোপ বানানোর ইচ্ছে আছে।
এছাড়া সরকারি কোন সহযোগিতা পেলে মানুষের কাছে স্বল্পদামে টেলিস্কোপ পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করবো। ফারাবীর বাবা জয়নুল আবেদীন বলেন, ফারাবী যখন টেলিস্কোপ বানানোর কাজ শুরু করেন তখন কিছুটা বিরক্ত লেগেছিল। অবসর সময়ে বাইরে আড্ডা না দিয়ে ঘরে বসে এসব তৈরি করতে ব্যস্ত থাকায় ভালো লাগতে শুরু করে। ফারাবী আরো ভালো কিছু করুক এ প্রত্যাশা সবসময়।
রাজারহাট উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মোছা. আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ফাহাদ আল ফারাবী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। সে পড়াশোনার পাশাপাশি দাবা খেলায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। এ বয়সে বাইরে আড্ডা না দিয়ে ঘরে বসে মেধার বিকাশ করতে টেলিস্কোপ বানানোর কাজটি খুবই প্রশসংসার দাবিদার। সরকারি কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ফারাবীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।
টিএইচ