কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউকিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান ঢাকা থেকে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছেছে।
ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
আজ শুক্রবার বেলা একটা ১৬ মিনিটের দিকে প্রকল্প এলাকায় গাড়ি বহর প্রবেশ করলে প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি ও রাশিয়ানদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা দুই দেশের জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়ি বহরকে স্বাগত জানিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে রাশিয়া থেকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের এ চালান আসে। বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে ঢাকা থেকে সড়ক পথে এই ইউরেনিয়ামের চালান শুক্রবার ভোরে রওনা হয়। ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর এলাকায় পৌঁছালে একটি গাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে মেরামত শেষে সকাল সাতটার দিকে গাড়িগুলো ছেড়ে যায়। এসময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি জানান, পাবনা-ঢাকা রুটে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য যানজট নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে আরিচা-কাজিরহাট হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় যান চলাচল করতে পারবে।
আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রকল্প এলাকায় সাজ সাজ কর্মকাণ্ড চলছে। অনুষ্ঠানকে সফল করে তুলতে এরই মধ্যেই রাশিয়া থেকে বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ঈশ্বরদীর রূপপুরে অবস্থান করছেন।
এর আগে গত ৮ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান আনতে সাইবেরিয়ায় অবস্থিত ইউরেনিয়াম প্লান্টে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়।
প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের জন্য ইউরেনিয়ামের প্রথম শিপমেন্ট সফলভাবে দেশে এসে রূপপুরে পৌঁছেছে।
প্রসঙ্গত, দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
টিএইচ