ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের নয়টি উপজেলার মধ্যে আকস্মিক ঘুর্ণিঝড়ে চারটি উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ১৮ টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড়ে এক হাজারের মতো বাড়িঘর, গাছপালা, কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ভাঙ্গা উপজেলায় ঘরের মধ্যে চাপা পড়ে ঝর্ণা বেগম(২১) নামে এক গৃহবধু ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সড়কে গাছ পড়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কাজ চলমান রেখেছে। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন।
বৃহস্পতিবার(৫ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ ঝর্ণা বেগম ভাঙ্গা উপজেলার ছোট হামিরদী গ্রামের শাহাবুদ্দিন শেখের স্ত্রী।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, মাত্র কয়েক মিনিটের ঘুর্নিঝড়ের ফলে উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের ছোট হামিরদী,বড় হামিরদী গ্রাম ও আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল, পুকুরপাড়, কর্নিকান্দাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি ঘরের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ কয়েকশো গাছপালার ডাল ভেঙ্গে ও উপরে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়াও ভাঙ্গা হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে সড়কের পুলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
শুক্রবার(৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ খোকন মিয়া নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘরের মধ্যে চাপা পড়ে ঝর্ণা বেগম নিহত হন। এছাড়াও আমার ইউনিয়নে প্রায় ৬০টি পরিবার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের তালিকার কাজ চলছে। গাছপালা ও কৃষি ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা চারটি উপজেলার ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ কেজি চাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার কাজ চলছে। জনপ্রতিনিধি,কর্মকর্তা-কর্মচারী,পল্লী বিদ্যুৎ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এ বিষয়ে কাজ করছে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারর মাঝে ১০ কেজি চাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টাবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ৬ টি, বোয়ালমারী উপজেলায় তিনটি ইউনিয়নের ৬ টি সালথা উপজেলার ১টি ইউনিয়নের ১ টি ও ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ৫ টি গ্রামসহ মোট ৮টি ইউনিয়নের ১৮টি গ্রাম আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে একজন গৃহবধূ নিহত হয়েছেন।
টিএইচ