নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া ও এবি ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ ২.৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ কাজে নিম্নমানের মাটিমিশ্রিত ভরাট, ইটের খোয়া দিয়েই রাস্তা সংস্কারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলীর সঠিক নজরদারি না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
লালপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, ওয়ালিয়া ইউনিয়নের নান্দ বটতলা হইতে রুইগাড়ী স্কুল পর্যন্ত ও এবি ইউনিয়নের পাটিকাবাড়ী নিজামের বাড়ি থেকে অর্জুনপুর পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ কাজ চলছে। আইআরআই ডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় চুক্তিমূল্যে ২ কোটি ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ১২৮ ব্যয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
গত ১১ জুন বিকেলে উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নরে রুইগাড়ী স্কুল সংলগ্ন নাম ফলক উন্মোচনের মাধ্য দিয়ে রাস্তা পাকাকরণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল। এরপর থেকে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো. আনিসুর রহমান। এই কাজে সিডিউলে উল্লেখ রয়েছে ০.৫ এফএম এর চিকন বালি দিয়ে বেড তৈরি ও চিকন ভরাট বালু ও মানসম্পূর্ণ ইটের খোয়া দিয়ে সাব-বেজ তৈরি করতে হবে।
সরেজমিন সড়কে দেখা যায়, মাটিমিশ্রিত ভরাট, সঙ্গে নিম্নমানের ইটের খোয়া মিশিয়ে সাব-বেজের কাজ চলছে। যা নিয়ে এলাকার সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার এই সড়ক। ২ ও ৩ নং ইটের খোয়া ও নিম্নমানের বালু দিয়ে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। কেউ দেখার নেই। আমার উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ঠিকাদার তো কাজ করেই যাচ্ছে।’ রহিম আলী নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, বালি তো নেই, ধুলা মাটির সঙ্গে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে সড়ক সংস্কারে কতটুকু টেকসই হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা বলেন, আমরা লালপুরে সবচেয়ে ভালো মানের সামগ্রীদিয়ে সড়কের কাজ করি। তবে এক্সেবেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে খোয়া ও ভরাট মেশানোর সময় কিছুটা মাটি মিশে থাকতে পারে।’
লালপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবউল হক বলেছেন, রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন উপসহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর মো. মহিউদ্দিন আলমগীর। তারপরও স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাস্তা পরিদর্শন করে সত্যতা পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের বালি ও খোয়া সড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি।
রাস্তার কাজে অনিয়ম হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্বরত উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর মো. মহিউদ্দিন আলমগীরকে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
টিএইচ