কাগজ কলমে সিটি করপোরেশন থাকলেও বাস্তবে দেখে মনে হবে এযেন এক গ্রাম। এমনই কথা বললেন বরিশাল নগরীর ২৭নং ওয়ার্ডের বৃদ্ধ বাবুল হাওলাদার।
তিনি জানান, আমি সিটি করপোরেশনের একজন ভোটার। কিন্তু সিটি করপোরেশনের মধ্যে বসবাস করলেও সিটি সেবা থেকে আমরা বঞ্চিত। কারণ নামেই শুধু সিটি করপোরেশন রয়েছে বাস্তবে দেখতে এ যেন এক গ্রাম। তিনি আরও বলেন, এখনও গ্রাম অঞ্চলে গেলে দেখতে পাবেন খালের মধ্যে রয়েছে বাঁশের চার। তাই গ্রামে না গিয়ে ২৭নং ওয়ার্ডে আসলেই দেখা যাবে সেই বাঁশের চার। তাই যাদের গ্রাম দেখতে মনে চায় তারা এখানে চলে আসেন। তাহলেই দেখতে পাবেন গ্রাম।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগে পিচ ঢালাইয়ের রাস্তা করে দেয়াড় নামে হ্যারিংবোনের রাস্তার ইট উঠিয়ে ফেলা হয়। আর এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন বরিশাল নগরীর ২৭নং ওয়ার্ডের মাঝের দোকান এলাকা সংলগ্ন সরদার সড়কের বাসিন্দারা। শুধু যে সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দারা ভোগান্তি পোহায় এমনটা নয়, ইট না থাকা ওই সড়কটি ব্যবহার করা পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের মাকরকাঠী ও কটুরাকাঠী গ্রামের বাসিন্দারাও ভোগান্তিতে রয়েছেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা হলেও বিভিন্ন জায়গাতে হাঁটু সমান পানি থাকায় সড়কের ওপরে সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয় ওই এলাকার মানুষকে। আর এ নিয়ে ভোগান্তিতে থাকলেও প্রভাবশালীদের আতঙ্ক ও ভয়ে কেউ সড়ক সংস্কারের কথা বলেন না বরিশাল নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরদার বাড়ি সড়কের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল বলেন, শহরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের দোকান এলাকার সরদার বাড়ি থেকে চাপরাসি বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ সিটি করপোরেশনের। এরপর থেকে রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের শুরু। ইউনিয়নের রাস্তাঘাট মাটির হলেও সরদার বাড়ি থেকে চাপরাসি বাড়ির দিক যেতে অনেকটা পথ হ্যারিংবোন করা ছিল। কিন্তু গত ইউনিয়ন নির্বাচনের আগে নতুন রাস্তা করে দেয়াড় নামে সেই হ্যারিংবোনের ইট তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে করে এখন শহরাংশের পাশাপাশি রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের দুই গ্রামের মানুষও ভোগান্তিতে রয়েছেন।
সিটি করপোরেশনের সরদার বাড়ি সড়কের রাস্তার ইট উঠিয়ে পাশের কালিজিরা সড়ক সংস্কারের সময় সেখানে দৃশ্য দেখেছি কিন্তু কেউ কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি। আর ওই সময় রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু নিজে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সিটির কোন জনপ্রতিনিধি না হলেও বলেছিলেন রাস্তাটি সংস্কার করে পিচ ঢালাই করে দেয়ার কথা।
কিন্তু গত কয়েক বছরে রাস্তাটি সংস্কার তো করা হলই না, মাঝে ইটের রাস্তা হয়ে গেছে মাটির রাস্তা। এ রাস্তা নিয়মিত ব্যবহারকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু হয়ত মনে করছিল, এমপির সঙ্গে তার ভাল খাতির তাই মেয়রকে দিয়ে সিটির অংশ আর এমপিকে দিয়ে ইউনিয়নের অংশের রাস্তার কাজ করাতে পারবেন। কিন্তু স্বাধীন দেশে তাদের তো এখন হদিস নাই, তাই জনগণই ভোগান্তিতে রইল।
এ বিষয়ে রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান আহম্মদ শাহরিয়ারকে পাওয়া যায়নি, আর জাতীয় তথ্য বাতায়নে দেয়া তার মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করেও সেটিতে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্ষমতাসীন আ.লীগ সরকার পতনের পর প্রভাবশালী এই জনপ্রতিনিধির দেখা মেলেনি। যেটুকু শোনা গেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় তিনি আসামিও হয়েছেন। সবমিলিয়ে তাই তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। আর রাস্তার ইট উঠিয়ে নেয়া কিংবা ভবিষ্যৎ নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ।
টিএইচ