ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা পৌর এলাকার জিকে সেচ খালের সঙ্গে মিশে গেছে চলাচলের রাস্তাটি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে ১০ গ্রামের পথচারীরা কোনো রকম চলাচল করলেও যানবাহন চলাচল করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
এলাকাবাসী জানান, এ রাস্তাটি ভেঙে খালের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় গাড়ি নিয়ে চলাচল করা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে পথচারীরা খালের মধ্যে পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন। অনেক সময় গাড়ি উল্টে পড়ে যায় খালে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে খালের ভাঙন রোধ করে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন তারা কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
পৌর এলাকার চতুড়া গ্রামের উভয় পাশ দিয়ে গভীর প্রশস্ত জিকে সেচ খাল গিয়ে মিশেছে কুমার নদীর সঙ্গে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে খালটি সংস্কার না করায় চতুড়া নামক স্থানের এ জায়গায় রাস্তা ভেঙে খালের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তা সংকুচিত হয়ে যাওয়ার কারণে ১০ গ্রামের মানুষের চলাচল কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এছাড়াও এলাকার মানুষের মাঠে যাওয়ার প্রধান রাস্তা এটি।
রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন জনসাধারণ চলাচল করলেও দীর্ঘদিন রাস্তাটি ভেঙে থাকায় যানবাহন চলাচল করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখন শুধু ঝুঁকি নিয়ে কোনোমতে ছোট যানবাহনে পথচারীরা চলাচল করতে পারছেন। ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোসহ বড় গাড়ি চলার কোনো উপায় নেই। পথচারী জুলফিকার আলি জানান, গত শুক্রবার একটা নসিমন গাড়ি উল্টে খালের মধ্যে পড়ে যায়।
চতুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা উজির আলী বলেন, আমার বাড়ির সামনে থেকে কয়েক মাস আগে রাস্তার বড় একটা অংশ ভেঙে খালে পড়ে যায়। এখন অল্প একটু আছে, সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পথচারীরা কোনোভাবে চলাচল করে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কর্তৃপক্ষের উচিত অতি দ্রুত রাস্তাটি রক্ষার জন্য স্থায়ীভাবে বাঁধের ব্যবস্থা করা। রাস্তাটির বেহাল দশার জন্য আমরা নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছি।
পৌর কাউন্সিলর মহিদুল ইসলাম মন্নু বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় বসবাস করি। রাস্তাটি ভেঙে খালের সঙ্গে মিশে যাওয়ার ফলে চলাচল করতে অনেক সমস্যা হয়। মালামাল বাজারে নিয়ে যেতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। এছাড়া বড় কোনো গাড়ি ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। তাই অতি দ্রুত রাস্তাটিকে বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা উচিত। তা না হলে কিছুদিন পর এ রাস্তা দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। বিভিন্ন মহলে ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। পৌরসভা থেকেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
ইজিবাইক চালক নজরুল ইসলাম/হাফেজ আলী বলেন, এ রাস্তাটি ভেঙে খালের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি নিতে হয়। তবে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখনই রাস্তাটি মেরামত করা না হলে এ রাস্তা দিয়ে অন্য এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে পৌরমেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, পৌরসভা থেকে এ রাস্তাটি বারবার সংস্কার করলেও জিকে খালের গভীরতার কারণে এ স্থানে বারবার ভেঙে যায়। এখানে স্থায়ী বাঁধ মেরামত প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান এম হাকিম আহাম্মেদ বলেন, এরইমধ্যে আমি ওই রাস্তার ভাঙা অংশটি কয়েকবার পরিদর্শন করেছি। এখানকার লোকজন সমস্যার মধ্যে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে তাদের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, জিকে খালের এ রাস্তার ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ