শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

শ্রীপুরে বাঁশের তৈরি পণ্যে অর্ধশত পরিবারের জীবিকা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

শ্রীপুরে বাঁশের তৈরি পণ্যে অর্ধশত পরিবারের জীবিকা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালেশ্বর ও দরগাহচালা গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার বাঁশ দিয়ে মাছ ধরার ছিপ, জালের কুঁড়ো, বিভিন্ন ধরনের লাঠি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। গ্রাম দুটির বিভিন্ন বাড়িতে মাছ ধরার ছিপসহ বাঁশের তৈরি নানা ধরণের লাঠি ও নানান জাতের বাঁশ দেখা যায়। অর্থনৈতিকভাবেও অনেক পরিবার এ পেশায় এখন সচ্ছল।

ডালেশ্বর ও দরগাহ চালা গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে পাতা দিয়ে তৈরি নিচু চালের নিচে ভ্যাকুয়াম দিয়ে কয়লায় আগুন দেয়ার কাজ চলছে। আগুনে ছ্যাঁকা হচ্ছে বাঁশের তৈরি মাছ ধরার জালের কুঁড়ো, বর্ষির ছিপ ও লাঠিসহ নানা ধরণের উপাদান।

নাার্গিস আক্তার বলেন, স্বামী-স্ত্রী ১৭ বছর বাঁশ দিয়ে তৈরি লাঠি জাতীয় উপকরণ তৈরি করে জীবিকাি নির্বাহ করছেন। গ্রাম থেকে বাঁশ কিনে শ্যমিক দিয়ে বাঁশ কেটে, সাইজ করে কারিগর দিয়ে বাঁশ পুড়িয়ে নানান জাতের উপকরণ তৈরি করেন। মাছ ধরার বর্ষির ছিপ, তৈরি পোশাক কারখানা লাঠি প্রভৃতি তৈরি করছেন। প্রতি মাসে তিন লাখ টাকার পুঁজি বিনিয়োগ করে চৈত্র মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত পুরোদমে এ ব্যবসা করছেন। বর্ষির ছিপসহ নানা জাতের তৈরি উপকরণ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

মাছ ধরার বর্ষির ছিপ তৈরির কারিগর শামস উদ্দীন বলেন, গত প্রায় ১০ বছর যাবত তিনি এ কাজটি করে আসছেন। প্রতিদিন ৭শ টাকার মজুরি পান। পরিবারের পাঁচজন সদস্য সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বর্ষির ছিপ আগুনে ছ্যাঁকা দিয়ে তৈরি করতে পারেন। 

অন্য উপাদান অর্ধশত তৈরি করতে পারেন। তিনি শুধু বাঁশের তৈরি নানা জাতের উপকরণ পোড়ানোর কাজ করেন। বাঁশ দিয়ে মাছ ধরার জালের কুঁড়ো, তৈরি লাঠি পুড়িয়ে দেন। আগে ছিল শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহ করার জন্য আর এখন করছেন ভাল লাগার কারণে।

একই গামের আমির আলী বলেন, তিনি বাঁশের তৈরি লাঠী জাতীয় উপকরণ তৈরির কাজ করছেন গত প্রায় ১৫ বছর যাবত। গ্রামের বাঁশ ঝাঁড় থেকে বাঁশ কিনে এনে প্রক্রিয়াকরণ পর্যন্ত কাজে প্রতিদিন ৭০০ টাকা মজুরি পান। তার সাথে আরও সাতজন শ্রমিক কাজ করেন। সকলের কাজ তদারকি ছাড়াও মোটা-চিকন বাঁশ নিজেই কেটে প্রক্রিয়া করেন। 

এ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত দরগাহচালা গ্রামের রুবেল ফকির বলেন, বছরের ৬ মাস ব্যবসাটি ভাল করা যায়। বিশেষ করে বৈশাখ মাস থেকে কার্ত্তিক মাস পর্যন্ত বর্ষির ছিপের চাহিদা থাকে। রাজশাহী নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা এসব সরবরাহ করেন। 

বরমী ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ৪নং ওয়ার্ডে (ডালেশ্বর ও দরগাহচালা) গ্রামের বেশ কিছু পরিবার অনেক আগে থেকেই মাছ ধরার ছিপ তৈরির ব্যবসা করে আসছে। লাভজনক এ ব্যবসা করে তারা পারিবারিকভাবে সফল। তারা সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতার কথা এখনও আমার কাছে বলেনি। প্রয়োজন হলে আমার মাধ্যমে সরকার থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

টিএইচ