বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

সংকটের মুখে সিলেটের চা শিল্প

সিলেট ব্যুরো

সংকটের মুখে সিলেটের চা শিল্প

সংকটের মুখে সিলেটের ১৬৭ বছরের পুরনো চা শিল্প। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বন্ধ হওয়ার দারপ্রান্তে চা বাগানগুলো। ঠিকমতো মজুরি না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এর সঙ্গে জড়িত হাজারো শ্রমিক। এছাড়া ভারত থেকে চোরাই পথের আসা চা দখল করছে দেশের বাজার। এমন পরিস্থিতিতে সিলেটের চা শিল্পকে বাচিয়ে রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভৌগলিক অবস্থান আর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে পৃথিবীর চা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। ১৬৫০ সালে চীনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। আর ভারতবর্ষে এর প্রথম চাষ হয় ১৮১৮ সালে। এদেশে ছোটবড় মিলিয়ে ১৬৬ টি চা বাগানের মধ্যে ১৪৮ টির অবস্থানই সিলেট বিভাগে। ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়ায় শুরু হয় বাণিজ্যিক চা-চাষ। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, পঞ্চগড়সহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায়।

তবে চায়ের দেশ সিলেটের চা বাগানগুলো নানা সংকটে। উৎপাদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চা বাগানগুলো। ঠিকমতো মজুরি না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এর সঙ্গে জড়িত হাজারো শ্রমিক।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা জানান, সিলেটে চা বাগানগুলোর অবস্থা ভালো না। চা উৎপাদন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। যার ফলে কয়েকটি বাগানের শ্রমিকদের বেতন ভাতা বকেয়া আছে। চা উৎপাদন কমে গেলে শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধাও কমে যাবে। এমটি হলে এ শিল্পে আরো ধস নামবে।

তারাপুর চা বাগানের ম্যানেজার ও কোওর্ডিনেটর রিংকু চক্রবর্তী বলেন, ব্রোকার্সদের সিন্ডিকেটের কারণে চা শিল্প আজ ধ্বংসের পথে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাই পথে আসছে চা। এমন চলতে থাকলে শ্রমিকদের মজুরি দেয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। যার ফলে শ্রমিকরা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হবে। সিলেটের প্রতিটি বাগানে অবস্থা খারাপ। চা শিল্পে এখন ঋণের হার এখন ১৪ শতাংশ যা আগে ছিলো ৯ শতাংশ। এই শিল্পকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নেয়ার দাবি বাগান মালিকেরা।

এ বিষয়ে ম্যাকসন ব্রাদার্স বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজহারুজ্জামান সুহেল বলেন, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বন্ধ হওয়ার দারপ্রান্তে চা বাগানগুলো। এক কেজি চা উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। কিন্তু বিক্র করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকায়। এছাড়া চোরাই পথে আসা চা সিলেটের চা এর সাথে মিশে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিলাম। তবে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এখনো।

সরকার সিলেটের চা শিল্পের দিকে নজর না দিলে খুব শিগগিরই বাগানগুলো বন্ধ হয় যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সিলেটের চা শিল্প ফিরে পাবে তার পুরনো রূপ। দেশের অর্থনীতিতে অবারো ব্যপক ভূমিকা রাখবে সিলেটের চা, এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের।

টিএইচ