শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

সমাজ সেবা অফিসের সনদে মৃত ছয় মাস পর জীবিত  

কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি,

সমাজ সেবা অফিসের সনদে মৃত ছয় মাস পর জীবিত  

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের এক ইউনিয়ন সমাজকর্মী অফিসের খাতা কলমে গত ছয় মাস ধরে মৃত বলে বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত থাকা নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা গ্রামের মৃত হামেদ শেখের স্ত্রী সায়েরা বেগম অবশেষে ইউএনওর হস্তক্ষেপে গত বুধবার তার বন্ধ ভাতার সমাধান হয়েছে। একই সাথে ক্ষতিপুরণসহ তার ভাতাও পুনরায় চালু করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসাবে পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের ওই সমাজকর্মী তাকে ৩ হাজার টাকা দিয়েছেন জানা গেছে। 

ঘটনার বিবরণে জানা যায়,  প্রায় ১০ বছরেরও বেশী সময় ধরে সায়েরা বেগম নিয়মিত বিধাব ভাতা ভোগ করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে গতবছর অক্টোবর মাস থেকে তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি তার ভাতা বন্ধের কারণ জানতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গেলে সেখানকার এক সমাজকর্মী তাকে জানিয়ে দেন যে তিনি (সায়েরা) মারা গেছেন মর্মে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ দেয়া হয়েছে। 

তাই তার বিধবা ভাতার কার্ডটি বাতিল করে আর একজনকে দেয়া হয়েছে। যেকারণে তার ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে তার পরিবর্তে কাকে ভাতা দেয়া হয়েছে তা তাকে জানানো হয়নি। পরবর্তীতে ঘটনাটি ইউএনও রুনু সাহার নজরে আসলে তিনি গত বুধবার সায়েরাকে ডেকে ঘটনাটি জানেন ও  বন্ধ হওয়া ভাতাটি আবার চালুর ব্যবস্থা করেন এবং ওই সমাজকর্মীকে ৬ মাসের  ভাতার ক্ষতিপূরণ বাবদ সায়েরাকে ৩ হাজার টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন। 

সায়েরা বেগম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আমি বাঁচে আছি, তাতে কি হবে জ্যান্ত মানুষকে মাইরা আমার বিধবা ভাতার টাকা চুরি করেছে কারা, তা জানতি গত ছয় মাস পার হইছে। অফিস থেকে কইছে আমার মরনের কথা কইয়ে ইউনিয়ন থেকে চিঠি দিছে তাই আমার ভাতার বই কাঁটা গেছে। আমার  আবার ভাতার বই বানাতি হবে।” 

ইউপি চেয়ারম্যান মল্লিক মাহামুদ হোসেন বলেছেন, ঘটনানাটি তিনি শুনেছেন। তবে অন্য একজনের মৃত্যুর সনদের বরাত দিয়ে সায়েরার নাম কর্তন করা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। ইউএনও ঘটনার সমাধান করায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের অভিযুক্ত সমাজকর্মী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, নিতান্তই ভুলবশত সায়েরা বেগমের নামটি কাটা পড়েছিল। যখন বুঝতে পেরেছি, তখনই স্যারদের সহযোগিতায় ঠিক করা হয়েছে।   

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, বিষয়টি জানতে পেরে সাথে সাথেই তিনি ইউএনওর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সায়েরাকে ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ সমাধান করেছেন এবং গত ৫ এপ্রিল থেকে তার বন্ধ হওয়া ভাতাটি আবার চালু করা হয়েছে। 

কালিয়ার ইউএনও রুনু সাহা বলেছেন, ঘটনাটি জানতে পেরে সংশ্লিষ্টদের ডেকে ঘটনার সত্যতা জানতে পারেন এবং মৃত বলে বন্দ থাকা সায়েরার নামের বিধবা ভাতা পূনরায় চালুর ব্যবস্থাসহ সায়েরাকে গত ৬ মাসের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সমাজসেবা অফিসের সমাজকর্মী তরিকুল ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

টিএইচ