লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ২৫০ টন চাল আত্মসাতের ঘটনার মূল হোতা ফেরদৌস আলমকে হাতীবান্ধার দইখাওয়া থেকে আটক করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সরকারি গুদামের চাল সরিয়ে নেয়ার পর থেকেই তিনি আত্মগোপন ছিলেন।
এদিকে গত শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর গুদাম ও চাতালে লোপাট হওয়া সরকারি চাল উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করেছেন কালীগঞ্জ ইউএনও জহির ইমাম। এ সময় উপজেলার শুকানদিঘি এলাকার ব্যবসায়ী একরামুল হকের গুদাম থেকে ৩০ টন এবং রাতে তুষভান্ডার বাজারের পেট্রলপাম্পে রাখা একটি ট্রাক থেকে সাড়ে ২৪ টনসহ মোট ৫৪ টন চাল উদ্ধার করা হয়। তুষভান্ডার বাজারের ইউনুস আলী আশরাফী নামের একজন ব্যবসায়ী চালগুলো অন্যত্র পাঠাতে ট্রাকটি ভাড়া করেছিলেন বলে জানা গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা খাদ্য পরিদর্শক (ওসি এলএসডি) ফেরদৌস আলম গত বৃহস্পতিবার রাতে ২৫ টি ট্রলিযোগে গুদাম থেকে চাল সরিয়ে ফেলেন।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক গুদামে অভিযান চালান কালীগঞ্জ ইউএনও জহির ইমাম। এ সময় চালের হিসাবে গরমিল ও গুদাম কর্মকর্তা লাপাত্তা থাকায় গুদাম সিলগালা করা হয়। চাল খোয়া যাওয়ার বিষয়টি তদন্তে গত শুক্রবার সকালে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
ওই কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সদস্যসচিব করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি ইমিতিয়াজ কবির বলেন, এ ঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এনামুল হকের করা অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয় কুড়িগ্রামে পাঠানো হয়েছে। গত শনিবার আটক খাদ্য কর্মকর্তা থানা হেফাজতে রয়েছেন।
এদিকে ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্যরা গত শনিবার ওই গুদাম পরিদর্শনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন। অপরদিকে খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও গুদামটি পরিদর্শন করেছেন।
কালীগঞ্জ নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম বলেন, সরকারি চাল উদ্ধারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গত শনিবার পর্যন্ত দুই দফায় মোট ৫৪ টন চাল উদ্ধার করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, খাদ্য গুদামের চাল আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করার পাশাপাশি চাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি সম্পদ উদ্ধারে পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ আমরাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি অভিযুক্ত খাদ্য কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
টিএইচ