বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ কাজী কেরামত আলীকে সাত দিনের পুলিশী রিমান্ড ও আরও ৩টি মামলায় গ্রেপ্তারের আবেদন করেছে পুলিশ। একই মামলায় অপর ৩৫ জনকে আদালতে জামিন শুনানির জন্য আনা হলেও তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করলে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
আসামিরা হলেন— সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য রাশেদুল হক অমি, রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর বর, মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আজম আলী মণ্ডল, মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক ফিরোজ বিশ্বাস, গোলাম মালেক রিংকু, মানিক সরদার, যুবলীগ নেতা মো. সাজ্জাদুল কবির তানজিম, রিয়াজুল হাসান, মো. রফিকুল ইসলাম, রিপন, নয়ন হোসেন খান, মো. দেলোয়ার হোসেন, শামীম আহমেদ, মো. নুরে আলম, পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দীন আহম্মেদ সুজন, সুমন শেখ, মো. জামাল খান, আমিরুল ইসলাম, শফিক খান বাবু, মো. আলহাজ্ব শেখ, আল ফারহান ফাহিম, মো. শাহিন মোল্লা, অনিক হাসান খান, মো. হাসেম খান, মো. জসিম, গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলাম মণ্ডলসহ ৩৫ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজবাড়ীতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ হামলার ঘটনায় আহত ছাত্র রাজীব মোল্লা বাদী হয়ে ৩০ আগস্ট রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
গত ৪ আগস্ট দুপুরে গোয়ালন্দ রেলগেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের ওপর গুলি বর্ষণসহ নানা অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে ও রাজবাড়ী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র শরীফুল ইসলাম ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়াও গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা মামলায় শিক্ষার্থী শাহীন ফকির রাজবাড়ী সদর থানায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক (২) বলেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ কাজী কেরামত আলীকে সাত দিনের পুলিশী রিমান্ডের জন্য ও অপর ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে।
তার রিমান্ড শুনানি আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ৩৫ জন আসামি আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। তবে উচ্চ আদালতে নথি থাকায় আগামী ৩০ জুন জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন। ফলে ৩৫ জনকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
টিএইচ