বরিশালের মাছের মোকামে আসতে শুরু করেছে ইলিশ। তবে এখনও কমেনি দাম। খুচরা বাজারে ৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯শ টাকা কেজি দরে। এই সাইজের ইলিশের দাম কয়েক দিন আগেও ছিলো ১২শ টাকা কেজি। আড়ৎদাররা বলেন, নদীতে মাছ নেই। সাগরের ইলিশ কিছু এসেছে, তবে দাম চড়া।
আড়ৎদার ও ব্যবসায়ী জহির সিকদার বলেন, শনিবার (১৯ আগস্ট) খুব ভোরে কয়েকটি মাছের ট্রলার এসেছে পোর্ট রোড বাজারে। সব মিলিয়ে ৫শ মণ ইলিশ এসেছে। গতবছর এ সিজনে যেখানে ৩০০০ থেকে ৫০০০ মন ইলিশ বিক্রি হয়েছে পোর্ট রোড বাজারে, সেখানে এটা খুবই সামান্য। সবচেয়ে বড় সমস্যা নদীতে কোনো ইলিশ পায়নি জেলেরা।
বরিশালের শায়েস্তাবাদ এলাকায় কয়েক ঘর জেলে পরিবার রয়েছে। তাদের একজন রুহুল আমিন বসেছিলেন পোর্ট রোডের মোবারকের আড়তে। রুহুল আমিন জানালেন, নদীতে তীব্র স্রোত চলছে। উপর থেকে বোঝা যায়না। তাই এই সিজনে নদীতে আর ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
আরো বলেন, আমাদের জেলেদের অবস্থা খুবই খারাপ। নদীতে মাছ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সবাই। জেলে নেতা খোরশেদুল মুন্সি জানান, নদীতে কোনো ইলিশ নেই। এটার অন্যতম কারণ চলতি বছর নিষেধাজ্ঞা চলাকালেই প্রচুর জাটকা নিধন হয়েছে।
সমপ্রতি বরগুনার একটি পুকুরে ইলিশ পাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে খোরশেদ মুন্সি বলেন, এছাড়াও এটা প্রাকৃতিক ভয়াবহ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইলিশ সহজে পুকুরে ঢোকার কথা নয়, ওরা গভীর পানিতে চলাচলে অভ্যস্ত। বরিশালের ইলিশের মোকাম খ্যাত পোর্ট রোড বাজারে সাগরের ইলিশ কেনাবেচা হয়েছে। তবে এই বাজারে ইলিশ নিয়ে সিন্ডিকেট হয়। যে কারণে বড় বড় জেলে নৌকা আর এখানে আসে না বলেও স্বীকার করেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।
যদিও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও ইলিশ বিশেষজ্ঞ বিমল চন্দ দাস বলেন, বরিশালের মোকামে ইলিশ কম সত্যি। কিন্তু যা আছে তার আকৃতি খুবই সুন্দর ও বড় জাতের। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জেলেরা সাগরে যেতে পারছেন না। তাই মাছ কিছুটা কম এই অঞ্চলে। পানি নামার যে ঢল তা ইলিশের জন্য উজান ঠেলার উপযোগী নয়।
তবে মনপুরা, কক্সবাজার এলাকায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি। বিমল চন্দ্র দাস আরো বলেন, চাপলি নামে ইলিশের বাচ্চা সবসময়ই কিছু না কিছু ধরা হয়েছে। ওটা চাপলি ধরা জালে ফেঁসে গেলে আর কিছু করার থাকে না। তবে সেটা কারণ নয়, ইলিশ এখন বরিশালের মোকামে এমনিতে কমই আসবে।
টিএইচ