মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নে ভরাট করা হচ্ছে অসংখ্য ফসলিজমি, জলাশয় ও পুকুর। অপরদিকে এসব ড্রেজারের দীর্ঘ পাইপ লাইনের সংযোগের জন্য এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট কাটার পাশাপাশি করা হচ্ছে ছিদ্র। এতে করে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কগুলো এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তাই দ্রুত এই ড্রেজার ব্যবসা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ইউনিয়নবাসী।
সরেজমিনে উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের নতুন ভাষানচর দিয়ে বয়ে চলা ইছামতী শাখা খালের কয়েকটি স্থানে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু ব্যবসার চিত্র দেখা গেছে। এতে এই খালটিতে সারি-সারি বালু বোঝায় অবৈধ বাল্কহেড চলাচল করছে। সেই বালু ড্রেজার ও পাইপের মাধ্যমে যাচ্ছে বিভিন্ন ফসলি জমি, জলাশয় ও পুকুরে।
গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, নতুন ভাসানচর, পূর্ব রামকৃষ্ণদী ও মোল্লাকান্দি গ্রামের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে এই খালটিতে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা করে যাচ্ছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ এসব অবৈধ ড্রেজারের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে জমিসহ রাস্তাঘাট। তাই এখনি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট রাতে লৌহজং উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের রসকাঠি এলাকায় পিকনিকের ট্রলার ডুবিতে ৯ জন নিহত এবং একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এঘটনায় সিরাজদীখান উপজেলার যু্বলীগ ও ছাত্রলীগ দুই নেতার বিরুদ্ধে বালু ব্যবসার অভিযোগ এনে মামলাসহ নিহতদের পরিবার মানববন্ধনও করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে লতব্দী ইউনিয়নে বালুবাহী বাল্কহেড অবাধে চলাচল করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, লৌহজংয়ে যদি ট্রলারডুবির ঘটনায় সিরাজদীখান উপজেলা যুবলীগ-ছাত্রলীগ দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে, তবে তাদের এলাকায় সেদিন রাতেও এই বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করছে এবং তাদের ইউনিয়নে অনেক ব্যক্তি বালু ব্যবসা করে যাচ্ছে।
তাদের নামে কেন মামলা হলো না? এই বিষয়ে খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন তারা। তারা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘাতকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যপারে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা মুঠোফোনে জানান, তারা কোন ড্রেজারের ব্যবসা করেন না। তাদের কোন ড্রেজার বা ড্রেজারের পাইপলাইন নাই।
লতব্দী ইউপি সদস্য মো. কামাল মাদবর বলেন, আমরা তাদের বহুবার বাধা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কারো কোন কথাই মানে নাই। অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
লতব্দী ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ মো. ফজলুল হক বলেন, এবিষয়ে আমি জানি না এবং কেউ আমাকে জানায়নি। আমি চাই অবৈধ ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীদের শাস্তি হোক এবং দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করে অবৈধ ড্রেজার ও বালি উত্তোলন বন্ধ করার দাবি জানায়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম তানভীর বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিব।
টিএইচ