বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

সুন্দরবনে থেমে নেই হরিণ শিকারিদের অপতৎপরতা

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

সুন্দরবনে থেমে নেই হরিণ শিকারিদের অপতৎপরতা

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবনের দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ মায়াবী চিত্রল হরিণের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। একদিকে বাঘের হামলা অন্যদিকে চোরা শিকারিদের কবলে পড়ে মারা পড়ছে অসংখ্য হরিণ। থেমে নেই চোরা শিকারিদের তৎপরতা। 

বন বিভাগের অভিযানে ধরা পড়ছে ১৪ শিকারিসহ ফাঁদে আটকা মৃত হরিণ। এই নিয়ে গত দুই মাসে বনবিভাগ ও পুলিশের পৃথক তিনটি অভিযানে ১৬০ কেজি হরিণের মাংস ১৪ শিকারি বিপুল হরিণ ধরার ফাঁদ ও ২টি ট্রলার। বন বিভাগের কড়া নজরদারির পরও নানা কৌশলে সুন্দরবনে ঢুকে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে চলেছে। 

ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশ্বখ্যাত এই সুন্দরবনের স্থলভাগ রয়েছে চার হাজার ১৪৩ বর্গ কিলোমিটার। অন্যদিকে এক লাখ ৩৩  হাজার ২৪৭ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের পর্যটন স্পট হিসেবে খ্যাত বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, আলোরকোল, হিরণ পয়েন্টসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিশেষ করে সকাল ও বিকেলে মায়াবী চিত্রল হরিণের পাল দেখা যায়। প্রতিবছর প্রায় অর্ধ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এ চিত্রল হরিণ। এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় কচিখালী অভায়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সবুর হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শরণখোলা রেঞ্জের ডিমের চর এলাকায় ট্রলার ও লোকজন দেখতে পেয়ে চ্যালেঞ্জ করলে বনে পালাবার চেষ্টা করলে বনবিভাগ ১১ জনকে আটক করে। 

তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বনে পেতে রাখা ফাঁদ থেকে একটি মৃত হরিণ উদ্ধার করে। আটককৃতরা হলেন— মো. ইব্রাহিম, মো. জাকির, নির্মল মণ্ডল, জাহাঙ্গীর হাওলাদার, মো. হেলাল, জাকির আকন, মো. সবুর, রফিকুল মুন্সী, গোবিন্দ হালদার ও ছগির আকন। এদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এ সময় ২টি ট্রলার ও ফাঁদ জব্দ করে। আটককৃতদের মামলা দিয়ে পরদিন বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, একশ্রেণির নানা পেশার মানুষ আছে যাদের হরিণের মাংসের প্রতি লোভ রয়েছে। তাদের চাহিদার কারণে হরিণ শিকারিরা হরিণ শিকার করতে পারলে বিক্রি করতে কোনো সমস্যা হয় না। যে কারণে হরিণ শিকারিরা সবসময় অর্থের লোভে হরিণ শিকারের আপতৎপরতা চালিয়ে যায়।

এ জন্য হরিণ শিকার বন্ধ হচ্ছে না। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, শিকারিদের প্রতিরোধে আমরা সর্বদাই তৎপর রয়েছি। এটা আমাদের বন বিভাগের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যারা শিকারি তারা সচেতন না। 

কারো কারো ইন্দনে অর্থের লোভে বিশাল আয়তনের এ সুন্দরবনে নানা কৌশলে ঢুকে, কিন্তু যারা হরিণের মাংস খাচ্ছে বা পছন্দ করছে তারা যদি না ক্রয় করে তাহলে এমনিতেই হরিণের মাংস বিক্রি করা বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে হরিণ শিকারিরা হরিণ শিকার করতে বনে ঢুকবে না। এ জন্য সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

টিএইচ